জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতি ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনা শুরু হয়েছে। আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের সদস্যরা বিএনপি’র বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের রাজনীতি করার অভিযোগ উত্থাপন করে বলেছেন, বিলুপ্ত মুসলিম লীগের পথেই এখন বিএনপি। আগামীতে অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না। তারা ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত সম্পর্কে সচেতন থাকারও আহ্বান জানিয়েছেন।
আজ রবিবার রাতে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন সংসদের প্রধান হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন। প্রস্তাবটি সমর্থন করেন সাবেক চিফ হ্ইুপ আ স ম ফিরোজ। আলোচনায় অংশ নেন সাবেক ডেপুটি স্পিকার অধ্যাপক আলী আশরাফ, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, সাবেক হুইপ শহীদুজ্জামান সরকার ও সংসদ সদস্য বেনজীর আহমেদ।
আলোচনার সূচনা করে অধ্যাপক আলী আশরাফ বলেন, সংসদে রাষ্ট্রপতি একটি অমূল্যে ভাষণ দিয়েছেন। দেশের মালিক জনগণ, সেটি বর্তমান সরকার প্রতিষ্ঠিত করেছে। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে একটি পক্ষের কী আষ্ফালন দেখলাম। জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে, সেখানেও নির্বাচন বিঘ্ন ঘটানোর নানা প্রচেষ্টা হয়েছে। কিন্তু জনগণ নির্বিঘ্নেই ভোট দিয়ে নতুন সরকার গঠন করেছে।
সরকারের উন্নয়ন-সফলতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, গ্রাম তো শহরে রূপান্তর হয়েই গেছে। কোথাও এখন তেমন কাঁচা রাস্তা নেই, প্রত্যেক ঘরে ঘরে এখন বিদ্যুতের আলো জ্বলছে। দেশ শুধু খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়, খাদ্য, মাছ, সবজি উৎপাদনেও উদ্বৃত্তের দেশ এখন বাংলাদেশ। অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দেশ থেকে জঙ্গীবাদ নির্মূল করে সারাবিশ্বে প্রসংসিত হয়েছেন। তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বিশ্বের অনেক বড় দেশকেও ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পথ ধরে বঙ্গবন্ধুর কন্যা দেশকে সব দিক থেকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন বলেই বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হয়েছে।
মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, একাদশ সংসদ নির্বাচনের ফলাফল ছিল প্রত্যাশিত। প্রধানমন্ত্রীর ইমেজ আর উন্নয়ন-সমৃদ্ধির পক্ষেই পুরো দেশের মানুষ ব্যালটের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের পক্ষে গণরায় দিয়েছে। নির্বাচনে পাকিস্তানপন্থী বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাস, নাশকতা, দুর্নীতি, সংখ্যালঘু নির্যাতন ও দুঃশাসনকে জনগণ ব্যালটের মাধ্যমে প্রত্যাখ্যান করেছে। যারা বারবার বঙ্গবন্ধুর কন্যাকে হত্যার চেষ্টা করেছে, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়েছে- তাদের ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে।
শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, নির্বাচন বানচাল করার অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। কিন্তু দেশের সকল রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে, আর এটি সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় ও প্রজ্ঞাবান নেতৃত্বের কারণে। পুরো দেশবাসীকে প্রধানমন্ত্রী ঐক্যবদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। ব্যাপক ভরাডুবির কারণে বিএনপি এখন হতাশায় ভুগছে। বিলুপ্ত হওয়া মুসলিম লীগের অবস্থা হয়েছে এখন বিএনপির। সত্তরের নির্বাচনে মুসলিম লীগ ৯টি আসন পেয়েছিল। এবার বিএনপি নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্ট ৮টি আসন পেয়েছে। ঠিকই তো আছে তারা একই লিগেসি বহন করছে। তাদের পাওয়া আসনও কাছাকাছি। এখানে বিএনপির এত হতাশ হওয়ার কী আছে? এটা ইতিহাসের শিক্ষা। বাংলার জনগণ এখন শেখ হাসিনার উন্নয়ন-সমৃদ্ধির নেতৃত্বের সঙ্গে একাট্টা। তিনি আরো বলেন, এই নির্বাচনের ফল শুধু দেশেই নয়, সারাবিশ্বেই প্রত্যাশিত ছিল। এ বিজয় শেখ হাসিনার নীতি, আদর্শ, অক্লান্ত পরিশ্রম ও উন্নয়নের বিজয়। ষড়যন্ত্রকারীরা থেমে নেই, তাই আমাদের ঘুমিয়ে যাওয়ার নয়, জেগে থাকার সময়। ষড়যন্ত্রকারীরা যেন আর ছোবল মারতে না পারে সেজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যেতে হবে।