মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেকের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রায় দু’কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ২ টি রাস্তা নির্মান কাজে অনিয়মের অভিযোগে তদন্ত শুরু হয়েছে। নিম্ন মানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা নির্মানের কারণে এলাকাবাসির আবেদনের প্রেক্ষিতে বুধবার ঢাকার একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন তদন্ত দল এ তদন্ত করেন। প্রধান প্রকৌশলীর পক্ষে ঢাকা সদর দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী শামছের আলীর নেতৃত্বে ৫ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধি দলটি ইতোমধ্যে রাস্তা দুটি নির্মাণে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়ম লক্ষ্য করেছেন। নির্মানাধীণ রাস্তা দু’টি হচ্ছে- গাংনীর মালসাদহ থেকে হিজলবাড়িয়া হয়ে হিন্দা ব্রীজ ও তেঁতুলবাড়িয়া থেকে হাড়াভাঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলো মিটার। এলাকার ৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌর সভার প্রায় ২লক্ষাধিক মানুষের চলাচলের জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগের হস্তান্তরকৃত প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের তদারকিতে এ রাস্তা দু’টি নির্মান করা হচ্ছে। হিজলবাড়িয়া গ্রামের বাশিরুল ইসলাম জানান, রাস্তা নির্মানের খবরে এলাকাবাসি খুব খুশি হয়েছিল। কিন্তু নির্মানের শুরু থেকেই নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তার কাজ শুরু হওয়ায় এলাকাবাসি হতাশ হয়। রাস্তাটি কয়েক মাসে নষ্ট হয়ে যাবে বলেও তিনি জানান। একই গ্রামের ছলেমান আলী জানান, নির্মাণ কাজের ত্র“টির বিষয়টি ঠিকাদার ও আওয়ামীলীগ নেতা এমএ খালেককে জানানো হলে তিনি রাজনৈতিক ও পেশী শক্তির ভয় দেখাতেন। তাই আর কেউ প্রতিবাদ জানায়নি। হিন্দা গ্রামের তাহাজ আলী জানান, ঠিকাদার প্রথমে রাস্তার জন্য কিছু ভাল ইট নিয়ে আসলেও পরে অজ্ঞাত কারণে ওই ইট তুলে এনে স্থানীয় ইটভাটার রাবিস ও ভাঙ্গা চোরা ইট দিয়ে রাস্তা নির্মান করে। উপজেলা প্রকৌশলী ও উপ সহকারী প্রকৌশলীরা কোন তদারকি করেন নি। মোটা অংকের টাকা লেন দেনেরও অভিযোগ করেছেন স্থানয়ি গ্রাম বাসিরা। একারনে এলাকাবাসি বিষয়টি তদন্তের জন্য প্রধান প্রকৌশলী বরাবর আবেদন করে। তদন্ত দলের প্রধান শামছের আলী জানান, রাস্তাটির তদন্তে গিয়ে মালসাদহ- হিজলবাড়িয়া সড়কের বিভিন্ন স্থানে নির্মান সামগ্রীর আলামত প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে বালির গভীরতা ২৪০০এমএম থাকার স্থলে পাওয়া গেছে ২৮৫ এমএম । ডব্লিউ বিএম ১০০% থাকার স্থলে রয়েছে ২৫%। খোয়ার গভীরতা ২৪০০ এমএম থাকার স্থলে ৫৫৫ এমএম। তিনি আরো জানান, নির্মানাধিন রাস্তার উপকরণ সংগ্রহ করে ও প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন ইতোমধ্যে ঢাকার পরীক্ষাগারে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। গাংনী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ঠিকাদার এমএ খালেক জানান, রাস্তা নির্মানে ত্র“টির যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সঠিক নয়। সামান্য এদিক ওদিক হতে পারে তা মারাত্মক কিছু না। কার্পেটিং করার আগে প্রতিনিধি দল তদন্তে আসেন। এটা তাদের রুটিন ওয়ার্ক। গাংনী উপজেলা প্রকৌশলী আঃ বাছেদ জানান, আমি নতুন এসেছি তাই আগের প্রকৌশলী কি করেছেন তা জানা নেই। জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মকলেছুর রহমান মুকুল জানান, এমএ খালেক যা করেছেন যদি সেটি অনিয়ম হয়ে থাকে তাহলে তার দ্বায়ভার তাকেই বহন করতে হবে। এর জন্য আওয়ামীলীগের কেউ দ্বায়ী নয়।