১/১১ এর আদলে চলছে মেহেরপুর পাবলিক লাইব্রেরী

১/১১ এর আদলে চলছে মেহেরপুর পাবলিক লাইব্রেরী

gagni mapনিজস্ব সংবাদদাতা মেহেরপুর ৪ জুলাই ঃ গতকাল দুপুরে মেহেরপুর পাবলিক লাইব্রেরীর সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর নেতৃত্বে বইপ্রেমী একদল পাঠক মেহেরপুর পাবলিক লাইব্রেরীতে গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কার্যক্রম বন্ধ করে নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন কার্যনির্বাহী পরিষদ গঠনের দাবীতে জেলা প্রশাসককে আবেদন দিয়েছে।
জানা যায়, গত ০৬/০৯/২০১২ খ্রিঃ তারিখে লাইব্রেরীর কার্যনির্বাহী কমিটি গঠনের জন্য ৪৫ দিনের জন্য অন্তবর্তীকালীন কমিটি গঠন করা হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার, মেহেরপুর সদর নাজনীন সুলতানা সদস্য সচিব হিসাবে দায়িত্ব বুঝে নেন। কিন্তু ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান করে নতুন কমিটির নিকট দায়িত্ব হস্তান্তরের কথা বলা থাকলেও অদ্যাবধি এ বিষয়ে তিনি কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। তিনি এ পর্যন্ত অন্তবর্তীকালীন কমিটির একটি মাত্র সভা আহবান করেন যেখানে নির্বাচন সংক্রান্ত কোন আলোচ্যসূচী স্থান পায়নি। লাইব্রেরীর গঠনতন্ত্র মোতাবেক ২১/১০/২০১২ খ্রিঃ তারিখের পর থেকে উক্ত অন্তবর্তীকালীন কমিটির কার্যক্রমের কোন বৈধতা নেই। উপরন্তু তিনি “এক/এগার সরকারের মত” স্বেচ্ছাচারী ভাবে লাইব্রেরীর কার্যক্রম চালাচ্ছেন এবং যদিও তিনি কখনই লাইব্রেরীতে আসেন না। সম্প্রতি তিনি লাইব্রেরীর জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র থেকে প্রাপ্ত অনুদানের ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার বই ক্রয় ও লাইব্রেরী মেরামত সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমে লাইব্রেরীর কোন সদস্যকে সম্পৃক্ত না করে দুনীতিবাজ লাইব্রেরীয়ান মীর রওশন আলী মনা-কে সদস্য সচিব করে তা সম্পন্ন করার প্রচেষ্টায় লিপ্ত আছেন। লাইব্রেরীর সদস্য ছাড়া তৃতীয় পক্ষ কিভাবে লাইব্রেরী উন্নয়ন কমিটিতে স্থান পায় তা বোধগম্য নয়। এছাড়াও লাইব্রেরী উন্নয়নের জন্য সরকারি ভাবে ৩ (তিন) টন বরাদ্দকৃত চাল বেশ কয়েকমাস পূর্বে উত্তোলন করা হলেও তা দিয়ে অদ্যাবধি কোন উন্নয়ন মূলক কাজ করা হয়নি। লাইব্রেরীয়ানের উদাসীনতা ও গাফিলতির কারণে ৩ (তিন) হাজারের বেশী বই লাইব্রেরীতে পাওয়া যায় না। বিভিন্ন সময়ে অডিট আপত্তিতে লাইব্রেরীয়ানের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অভিযোগ থাকলেও তার বিরুদ্ধে অজ্ঞাত কারণে কোন প্রকার ব্যবস্থা নেয়া হয় না। মীর রওশনা আলী মনা বই বাঁধায়ের নামে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে বিল উত্তোলন করে বই বাঁধাই না করলে তদন্ত কমিটি তাকে অর্থ ফেরত প্রদানের জন্য সুপারিশ করে এবং নির্বাহী কমিটি তাকে উক্ত অর্থ ফেরত প্রদানের জন্য একাধিক বার পত্র দিলেও তিনি কোন টাকা ফেরত না দিয়ে বহাল তবিয়তে আছেন। আবার সেই লাইব্রেরীয়ানকে (যিনি লাইব্রেরীর একজন কর্মচারী) সদস্য সচিব করে লাইব্রেরীর উন্নয়ন মূলক কাজ করানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে। ঐতিহ্যবাহী এ লাইব্রেরীটি বর্তমানে একেবারেই পাঠক শূন্য। এমনকি সন্ধ্যার পর বিদ্যুৎ চলে গেলে সেখানে জেনারেটর থাকা সত্বেও তার ব্যবহার তো দূরের কথা একটি মোমবাতিও জ্বালানোর ব্যবস্থা নেই। তিনজন কর্মচারীর মধ্যে দুজন চাকরী ছেড়ে চলে গেলে নতুন নিয়োগের কোন ব্যবস্থা করা হয়নি। একমাত্র কর্মচারী লাইব্রেরীয়ান ইচ্ছামত লাইব্রেরী খোলে, বন্ধ করে। কখনও কখনও তার লাইব্রেরী সংলগ্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লাইব্রেরী অরক্ষিত রেখেই চলে যায়। সে সুযোগে নিত্যদিন চুরি হচ্ছে মূল্যবান বই। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পাবলিক লাইব্রেরীর পক্ষে আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক দ্রুত তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
মেহেরপুর সংবাদ