মেহেরপুরের বারাদিতে (মউক) পরিচালিত তৃণমূল একাডেমিতে  ৫ম শ্রেণীর ছাত্রীকে যৌন হয়রানি- অভিযুক্তের শাস্তির দাবীতে স্কুল ঘেরাও

মেহেরপুরের বারাদিতে (মউক) পরিচালিত তৃণমূল একাডেমিতে ৫ম শ্রেণীর ছাত্রীকে যৌন হয়রানি- অভিযুক্তের শাস্তির দাবীতে স্কুল ঘেরাও

p-300আমাদের মেহেরপুর ডট কমঃ যে প্রতিষ্ঠানটি দাতা সংস্থার অর্থায়নে যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে কাজ করে। এবার সেই প্রতিষ্ঠানে এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ৫ম শ্রেণীর পাঁচ ছাত্রীর যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে। ‘মানব উন্নয়ন কেন্দ্র’ (মউক) নামের ওই সংগঠনটির অভিযুক্ত প্রোগ্রাম ম্যানেজার মাহফুজুর রহমানের (৩৮) শাস্তি দাবিতে বৃহস্পতিবার এলাকার শত শত মানুষ বিদ্যালয় ঘেরাও করে। পুলিশ কর্মকর্তার মধ্যস্থতায় অভিযুক্তের শাস্তি প্রদানের আশ্বাসে ঘেরাও প্রত্যাহার হলেও এলাকায় বইছে ঘৃনা ও প্রতিবাদের ঝড়।
অভিযোগ সুত্রে প্রকাশ, সদর উপজেলার আমঝুপিতে অবস্থিত মানব উন্নয়ন কেন্দ্র (মউক)। সদরp-302 উপজেলার আমঝুপি গ্রাম, বারদী বাজার ও পিরোজপুর গ্রামে মউক এর তত্ববধানে ৩টি বিদ্যালয় পরিচালিত হয়ে আসছে। মাহফুজুর রহমান মাহফুজ এ তিনটি স্কুলের কেয়ারটেকারের দায়িত্ব পালন করেন। ফলে প্রায়ই সে এ স্কুল গুলোতে যাতায়াত করেন। এ সূযোগে সে তার মেয়ের বয়সের মেয়েদের নানা কৌশলে যৌন হয়রানি করে আসছে। কখনও গায়ে হাত বুলিয়ে, কখনও চুম্বন করে আবার কখনও জড়িয়ে ধরে তাদেরকে যৌর হয়রানি করে থাকে বলে জানিয়েছে এসব কোমলমতি শিশুরা। লজ্জার ভয়ে অনেকেই মুখ খোলেনি। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার যৌন হয়রানির শিকার হয় ৫ম শ্রেণির এক ছাত্রী। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকার মানুষের মাঝে ক্ষোভ দেখা দেয়। বেশ কয়েকদিন অতিবাহিত হলেও কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় বিদ্যালয় ঘেরাও করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বারাদি বাজারের পল্লী চিকিৎসক আসাবুল হক বাবলু।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত মেহেরপুর সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল মতিন জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা মিলেছে। ভিকটিমের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরর প্রস্তুতি চলছে। অভিযুক্ত মাহাফুজকে দ্রুত গ্রেফতার করা হবে এবং আদালতের কাঠগড়াই দাঁড় করানো হবে। এ ধনের অপরাধে কোন ছাড় দেয়া হবে না বলেও হুশিয়ার করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।
তবে মউক নির্বাহী পরিচালক আসাদুজ্জামান সেলিম ঘটনাটি সম্পূর্ন মিথ্যা দাবি করে বলেছেন বিদ্যালয়টি জেলার মধ্যে ভাল ফলাফল করেছে। ঈর্ষান্বিত হয়ে এলাকার কিছু মানুষ সাধারন একটি বিষয়কে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা করছেন।
কে এই মাফুজ
স্থানীয় মানুষ ও ভুক্তভোগীদের তথ্যমতে, মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামের আজিজুলের ছেলে মাহাফুজুর রহমান মাহফুজ। স্থানীয় এনজিও মউকের পরিচালকের সাথে সু-সম্পর্ক থাকায় ৮/১০ বছর আগে প্রেগামে ম্যানেজার হিসেবে নিয়োগ পায় সে। পরিচালকের আস্থাভাজন হওয়ায় তার ব্যাক্তিগত সহকারি হিসেবেও দায়ীত্ব পালন করে থাকেন। ফলে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত হয় সে। তার লালসার শিকার হয়েছে অনেক নারী। শুধু তাই নয় কোন শিশুও রক্ষা পায়নি তার হাত থেকে। তিনটি স্কুলের কেয়ার টেকারের দায়ীত্ব পাওয়ার পর থেকেই তার অপকর্মও বেড়ে যায়। স্কুলের কোমলমতি শিশুরাও রক্ষা পাচ্ছে না তার হাত থেকে। একটি প্রভাবশালী এনজিওতে কাজ করায় তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। কয়েক বছর আগে আমঝুপি জোয়ার্দ্দার পাড়ার কাদের মিয়ার বাড়িতে তৃনমূল মডেল একাডেমি স্কুলের যাত্রা শুরু হয়। সেখানে মাফুজের যৌন হয়রানির শিকার হয় ৪র্থ শ্রেণীর এক ছাত্রী। এ ঘটানা ছড়িয়ে পড়লে গ্রাম্য শালিশে তাকে টেবিলের উপরে থুতু ফেলে চাঁটানো হয়। তার পরও থেমে নেই তার অপকর্ম।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মাহাফুজুর রহমানের সাতে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করতে চাইলে তাকে পাওয়া যায়নি।
মেহেরপুর সংবাদ