তবুও তিনি কুমারী !

তবুও তিনি কুমারী !

SHOMA Pictureআমাদের মেহেরপুর ডট কম ঃ কুমারী পরিচয়ে একের পর এক প্রেম আর গোপনে বিয়ে করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হয়েছেন মেহেরপুর সদরের হিতিম পাড়ার আফসান আলীর মেয়ে দিলরুবা আকতার সোমা। গত ১০ বছরে কুমারী পরিচয়ে ৫ বার বিয়ে করেছেন। সব ক’টি বিয়ে হয়েছে কাজী অফিসে। আর তাদের দাম্পত্য জীবনও বেশী দিন স্থায়ি হয়নি। কোনটা ৩ মাস আবার কোনটা ৬ মাস পরে বিচ্ছেদ ঘটেছে। আবার কোন কোন বিয়ে ও বিচ্ছেদ ঘটনা গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। তবে সবার কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে মোটা অংকের টাকা। সর্বশেষ সোমার প্রতারণার শিকার হয়েছেন গাংনী উপজেলা শহরের হামিদ আর্ট অ্যান্ড ডিজাইনের স্বত্বাধিকারী আঃ হামিদ। বাড়ি ভাড়া চাওয়ায় হামিদের নামে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেছে সোমা।
জানা গেছে, দিলরুবা আকতার সোমা মোবাইল ফোনে মিস্ড কলের সুত্র ধরে প্রেমজ সম্পর্ক গড়ে তুলে গোপনে কাজি অফিসে বিয়ে করে। বিয়ের কয়েক মাসের মাথায় নানা অজুহাতে স্বামীর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে স্বামীর সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এক পর্যায়ে হয়ে যায় বিয়ে বিচ্ছেদ। আবার কোনটা আদালত কিংবা কাজি অফিসে নিস্পত্তি হয়। সোমার প্রথম বিয়ে হয় ২০০২ সালের ৫ ফেব্র“য়ারি । ১৮ বছর বয়স দেখিয়ে সোমা মেহেরপুর শহরের আঃ বারীর ছেলে আহসানের সাথে বিয়ে করে। বিয়ের ৩ মাসের মাথায় সে পরোকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে প্রথম স্বামীকে ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। তবে তার কাছ থেকে নেয়া হয় দেড় লাখ টাকা। দির্ঘ দিন বিভিন্ন জনেকে স্বামি পরিচয় দিয়ে ঘর ভাড়া নিয়ে বসবাস শেষে গত ১৮ মে ২০০৯ সালে গাংনীর খাসমহল গ্রামের নজরুলের ছেলে নাজমুলের সাথে বিয়ে করে করে সোমা। এ বিয়েতেও সোমা নিজেকে কুমারী দাবী করেন ও বয়স দেখানো হয় ১৯ বছর। ২০১২ সালে তাদের বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটে। এ ঘটনার ৪ দিনের মাথায় সোমা নিজেকে কুমারী হিসেবে পরিচয় দিয়ে চুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জের কাজি মোমতাজুল ইসলামের অফিসে বিয়ে করেন। বর হিসেবে দেখানো হয় মেহেরপুর চাঁদ বিলের সৈয়দ আলী শাহ’র ছেলে ওয়ালি উল্লাহকে। এ ক্ষেত্রে সোমা নিজের পিতার নাম লেখিয়েছে আকসান আলী। তবে ওয়ালি উল্লাহ জানেন না এ বিয়ের ঘটনা। মাস খানেক পর ওয়ালি উল্লাহ’র কাছে স্ত্রীর দাবী নিয়ে মোটা অংকের টাকা দাবী করলে বিষয়টি জানা জানি হয়। তিনি (ওয়ালি উল্লাহ) জানান, অন্য লোককে সাজিয়ে এ বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। কাজি সাহেবও একটি সনদ পত্র দিয়েছেন। পরে একই গ্রামের ওয়ালি উল্লাহ নামের অন্য একজন ব্যবসায়িকে বিয়ে করেন। ইনি বিয়ের মাস খানেক পরে সোমার আগের বিয়ে ও পরোকীয়ার কথা জেনে গেলে সোমাকে তালাক প্রদান করেন। এ ব্যাপারেও মেহেরপুর আদালতে একটি মামলা বিচারাধিন।
এ ঘটনার মাস ছয়েক পর আবারো সোমার দ্বিতীয় স্বামী নাজমুলের সাথে মেহেরপুরের কাজি মসলেম আলীর অফিসে বিয়ে করেন। এ সময় সোমা আগের বিয়ের বিষয়ে গোপন করে কুমারী হিসেবে পরিচয় দেন। তবে স্বামি নাজমূল জানেন না এ বিয়ের কথা। অন্যজনকে বর সাজিয়ে বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে বলে দাবি করেছেন নাজমূল।
সর্বশেষ সোমার প্রতারণার কবলে পড়েন গাংনীর হামিদ আর্ট অ্যান্ড ডিজাইনের স্বত্বাধিকারী আঃ হামিদ। তিনি জানান, ৫ মাস আগে সোমা তার বাড়ির একটি ফ্লাট ভাড়া নেয়। বাড়িতে বিভিন্ন সময়ে পুরুষের আগমন দেখে ও মাসিক ভাড়া পরিশোধ না করায় বাড়ি ছেড়ে দিতে বলা হয় সোমাকে। সোমা কয়েক দিন সময় নেয়। এরই মাঝে গত ২০ জুন সোমা গাংনী থানায় হামিদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করলে পুলিশ তাকে আটক করে জেল হাজতে পাঠায়। সম্প্রতি তিনি জামিনে রয়েছেন।
এ ব্যাপারে সোমা ও তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হলে জানান, যতটা শনেছেন অতটা সঠিক নয়।
মেহেরপুর সংবাদ