কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি —মেহেরপুরে অবৈধ ইটভাটা। কয়লার বদলে পুড়ছে কাঠ

কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি —মেহেরপুরে অবৈধ ইটভাটা। কয়লার বদলে পুড়ছে কাঠ


OLYMPUS DIGITAL CAMERAফারুক আহমেদ,আমাদের মেহেরপুর ডট কম ঃ
নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রতি বছর নতুন নতুন ইটভাটা গড়ে উঠছে। আর এ সকল ইটভাটায় প্রতিদিন গড়ে ১০/১২ হাজার মন জ্বালানী কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। আর এসব কাঠের উৎস সংরক্ষিত বা গৃহস্থালীর বাগান। ইটের ভাটায় কাট পোড়ানোর ফলে বন উজাড় হচ্ছে। ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় এলাকার পরিবেশ দূষিত হচ্ছে । ছড়াচ্ছে বিভিন্ন রোগবালাই । এতে পরিবেশ যেমন নষ্ট হচ্ছে, তেমনি নষ্ট হচ্ছে আবাদী জমি, উজাড় হচ্ছে গাছ পালা, ভারসাম্য হারাচ্ছে প্রকৃতি। তাছাড়া জেলার শতাধিক ইটভাটা মালিকের সাথে কাষ্টমস কর্মকর্তারা সাজগোজ করে বিপুল পরিমান টাকা পকেটস্থ করছে একারনে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। প্রাই প্রতিটি ইট ভাটার মালিকদের সাথে চুক্তি মোতাবেক অর্থ আদায় করা হচ্ছে। কাষ্টমস কর্মকর্তাদের নজর দারি করলে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে। প্রাপ্তOLYMPUS DIGITAL CAMERA তথ্যমতে কয়েক টি ইটভাটার সাময়িক সনদ পত্র থাকলেও বাকি ইটভাটার কোন অনুমোদন নেই। প্রভাবশালী রাজনীতিকরা প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে ক্ষমতার জোরে ইটভাটা তৈরী করছে। ভাটার চিমনি তৈরীতে সরকারী নির্দেশনা থাকলেও ইটভাটা মালিকরা ব্যারেল ড্রামের চিমনি ব্যাবহার করছে । ইতোমধ্যে পুলিশ প্রশাসন অবৈধ ইটভাটার তালিকা তৈরী করে অভিযান পরিচালনার জন্য জেলা প্রশাসনের নিকট আবেদন করলেও অজ্ঞাত কারণে অভিযান থমকে গেছে। তবে লোক দেখানো কয়েক টি অভিযান চালানো হলেও নাম মাত্র জরিমানা করেই দ্বায়িত্ব শেষ করেছে। সচেতন মহলের অভিযোগ,যেখানে সেখানে ইটভাটা তৈরী হওয়ায় আবাদী জমিগুলো নষ্ট হচ্ছে। ইট তৈরিতে সময় মাটির প্রয়োজন হলে এলাকার লোকজনের কাছ থেকে আবাদি জমির উপরের এক থেকে দেড়ফুট মাটি কেটে ইট তৈরী করে। এতে ফসলী জমির উর্বরা শক্তি নষ্ট হয়। মুধু তাই নয়, ইটভাটার নির্গত কালো ধোয়ায় এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে ও আবাদি জমির ফসল নষ্ট হচ্ছে। কোন ইটভাটায় অনুমতিপত্রের শর্তনুযায়ী এক টুকরা কয়লা ব্যবহার করা হয় না । ব্যবহার করা হয় কাঠ। বিশেষ করে ফলজ ও বনজ বৃক্ষ ছাড়াও বাঁশের মোথা ব্যবহারের ফলে বাঁশঝাড় উজাড় হচ্ছে। ইটপোড়ানো নিয়ন্ত্রণ আইনে উল্লেখ রয়েছে যে, আবাদি জমিতে কোন ইটভাটা তৈরী করা যাবেনা ও ১২০ ফুট চিমনি ব্যবহার করতে হবে। এছাড়াও কাঠ পোড়ানো যাবেনা। অথচ সকল ইটভাটায় কয়লার বদলে কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে প্রভাবশালীরা প্রতি বছর নতুন নতুন ইটভাটা তৈরী করছে। সভিল সার্জন আব্দুস সহিদ জানান, ইটভাটায় নির্গত কালো ধোয়ায় মানুষের শ্বাসকষ্ট, হাপানি, ক্যান্সারসহ নানা রোগের সৃষ্টি হয়। তাছাড়া অতিরিক্ত কার্বণ-ডাই অক্সাইডের কারণে ফসল ও এলাকার পরিবেশ নষ্ট হয়। অনতি বিলম্বে পরিবেশ রক্ষায় প্রশাসনিক পদক্ষেপ জরুরী।

মেহেরপুর সংবাদ