১৭ দিন আটকে থাকার পর রানা প্লাাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার কর্মীরা বের করে নিয়ে আসলেন জীবিত রেশমাকে। জয় হলো মানুষের প্রার্থনা আর ভালবাসার। উল্লাস ধ্বনির মাধ্যমে সবাই স্বাগত জানালেন রেশমাকে। এ বাস্তব হার মানিয়েছে বহু গল্পকেও। তাকে উদ্ধারের পর এম্বুলেন্সে করে সিএমএইচে নেয়া হয়েছে। রেশমার সন্ধান পাওয়া সেনা সদস্য বলেছেন, ধসে পড়া ভবনের দোতলায় ছোট একটা ছিদ্র দেখতে পেয়ে একটি রড ধরে নাড়া দেই। এসময় একজন মানুষের শব্দ পাওয়া যায়। তখন সে ছিদ্রের কাছে এসে বাঁচানোর আবেদন জানান। তার নাম রেশমা বলে জানায়। সে একজন পোশাক শ্রমিক। তখন আমি তাকে জিজ্ঞেস করি, তুমি এতদিন কি খেয়ে বেঁচে ছিলে। সে বলেছে, ওই ফ্লোরের পচা খাবার খেয়ে বেঁচে ছিল। তবে খাবার শেষ হয়ে যাওয়ায় গত দুদিন ধরে কিছু খায়নি। এরপর তাকে পানি ও শুকনো খাবার দেই। ওই সেনা সদস্য আরও জানিয়েছেন, রেশমা যে ফ্লোরে আটকে ছিল সেখানে হাঁটা-চলা করার মতো জায়গা ছিল। এজন্যই সে বেঁচে ছিল। রেশমার উদ্ধার অভিযানে যোগ দেন নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল হাসান সারওয়ার্দী। জীবিত সন্ধান পাওয়ার পর উপস্থিত সবাইকে আল্লাহর কাছে দোয়া করতে বলেন তিনি। এসময় সবাই রেশমা জীবিত ফিরে আসার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেন। এর আগে বেলা সোয়া তিনটার দিকে রেশমার সন্ধান পাওয়ার পর তাকে উদ্ধারে প্রাণপণ চেষ্টা চালান উদ্ধার কর্মীরা। সতর্কতার সঙ্গে কাটার মেশিন দিয়ে রড কেটে সুড়ঙ্গ তৈরি করেন। দীর্ঘ এক ঘণ্টা চেষ্টার পর জীবিত বের করে আনা হয় রেশমাকে। ভবন ধসের ১৭ দিন পর বেঁচে থাকার ঘটনাকে অনেকেই অলৌকিক বলে অভিহিত করছেন। এর আগে জীবিত শাহীনাকে উদ্ধার করার সময় রড কাটতে গিয়ে ওই ফ্লোরে আগুন ধরে যায়। ফলে শাহীনাকে আর জীবিত উদ্ধার করা যায়নি। এসময় গুরুতর অগ্নিদগ্ধ হন উদ্ধারকর্মী এজাজ। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনিও মারা যান।