দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার একটি স্কুলপাঠ্য থেকে জার্মান শিশুদের মাথায় ঢোকানোর চেষ্টা হয়েছিল, অ্যাডলফ হিটলার হচ্ছেন শান্তির বাহক আর ব্রিটিশরা যুদ্ধবাজ। ১৯৪২ সালের ওই বইটি আগামিকাল লন্ডনে নিলামে উঠবে।
একটি ব্রিটিশ দৈনিক এই খবর জানিয়ে বলেছে, বইটির মাধ্যমে নাৎসি জমানার ‘সুখ্যাতি’ করে শিশুদের বোঝাতে চাওয়া হয়েছিল ব্রিটিশরা তাদের উপনিবেশগুলোয় কী ভয়ানক অত্যাচার চালাচ্ছে। হিটলার সেখানে শান্তির বাহক
ও প্রচারক। অন্য দিকে ভারত বা আয়ারল্যান্ডে ব্রিটিশ শাসকদের নিপীড়নের ইতিহাস সবিস্তারে বর্ণনা করা হয়েছে বইয়ে। কিন্তু নাৎসি কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের বীভৎসতা নিয়ে একটি শব্দও খরচ করা হয়নি সেখানে। আবার হিটলার যে উইলিয়াম শেক্সপিয়রের লেখার কত বড় গুণগ্রাহী ছিলেন, ফলাও করে বলা রয়েছে সেটাও।
বইটির ইংরেজি অনুবাদের নাম ‘ইংলিশ টেক্সটবুক থিওরি ফর কলেজেস অ্যান্ড হাইস্কুল।’ ইউরোপ জুড়ে নাৎসি বাহিনীর রমরমার সময়েই বইটি লেখা বলে মনে করা হচ্ছে। ওই সময়ে অর্থাৎ ৪০-এর দশকেই ব্রিটেনে হামলা চালানোর ছক ছিল জার্মানির। তা বাস্তবায়িত হয়নি ঠিকই কিন্তু জার্মানির পরিকল্পনা ছিল, এই বইটি ব্রিটেনে হামলার আগে ছাপিয়ে জার্মান শিশুদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। যাতে ব্রিটেন সম্পর্কে তাদের একটা ‘ধারণা’ তৈরি হয়।
এক জনের ব্যক্তিগত সংগ্রহে ছিল বইটির একটি কপি।
বইটির দাবি, ইহুদিরা ব্রিটিশ ছাপাখানা চালাত। ব্রিটিশরা আবার গোপনে ফ্যাসিবাদ সমর্থন করত এমন তথ্যও রয়েছে। তবে সব ছাপিয়ে রয়েছে হিটলারের শেক্সপিয়র-প্রীতির বর্ণনা। বইয়ের প্রচ্ছদে ছাপা হয়েছে শেক্সপিয়রের জন্মস্থান স্ট্র্যাটফোর্ড-আপন-অ্যাভন, ওয়ার্কউইকশায়ারের একটি ছবি।
হিটলারের প্রশস্তি করে বইটিতে লেখা: ‘বিশ্বের সাংবাদিকরা তাঁকে মিথ্যেবাদী বলে।
উনি ফ্রান্সের প্রতি বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, এই দু’দেশের মধ্যে ঝগড়ার কোনও অবকাশ নেই। কিন্তু ফ্রান্সের সংবাদমাধ্যম উল্টে শত্রুতা করল। নিজেদের সেনাশক্তি বাড়িয়ে তুলল ওরা।’
“জার্মানি যদি সত্যিই ব্রিটেনে আক্রমণ চালাত, তা হলে ব্রিটেনের হাল কী হত?
বইটা থেকে সেটারই শিহরণ জাগানো অভিজ্ঞতা জানা যাবে”, বলছেন লন্ডনের নিলাম-সংস্থার রিচার্ড ওয়েস্টউড-ব্রুকস। বইটির দর অন্তত ২৫০ পাউন্ড অর্থাৎ ২১৬০০ টাকা উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে।