রাষ্ট্রদ্রোহ এবং তথ্য প্রযুক্তি আইনে গ্রেপ্তার হলেন মাহমুদুর রহমান।১৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

রাষ্ট্রদ্রোহ এবং তথ্য প্রযুক্তি আইনে গ্রেপ্তার হলেন মাহমুদুর রহমান।১৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

mahmudur rahman আজ বৃহস্পতিবার   সকাল ৯টার দিকে নাস্তার টেবিল থেকেই নানা জল্পনা শেষে গ্রেপ্তার হলেন মাহমুদুর রহমান। আলোচিত স্কাইপ কেলেঙ্কারি ও ব্লগে ধর্মকে নিয়ে কটূক্তিমূলক লেখা প্রকাশের পর থেকেই বাজারে জোড় আলোচনা ছিল গ্রেপ্তাররের  শেষ পর্যন্ত ২০১২ সালের ১৪ই ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় করা একটি মামলায় পুলিশ আমার দেশ অফিস থেকে গ্রেপ্তার করে মাহমুদুর রহমানকে। ঢাকা মহানগরপুলিশেরডিসি(মিডিয়া) মো. মাসুদুর রহমান বলেন, রাষ্ট্রদ্রোহ এবং তথ্য প্রযুক্তি আইন ২০০৬ এর ৫৬ ও ৫৭ ধারায় মাহমুদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে ডিবি কার্যালয়ে রাখা হয়।বেলা তিনটার দিকে তাঁকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে হাজির করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে সাদা পোষাক ও পোষাকধারী অর্ধশতাধিক পুলিশের একটি দল আমার দেশ কার্যালয় কর্ডন করে। দায়িত্বরত নিরাপত্তাকর্মীকে গেট খুলে দিতে বললে তারা বাধা দেন। এসময় নিরাপত্তা বিভাগের সুপারভাইজার আবদুর রহমান ও অফিস পিয়ন মাহমুদকে মারধর করে পুলিশ।পাঞ্চ কার্ড নিয়ে আমারদেশ অফিসে প্রবেশ করে পুলিশ এসময়  লুঙ্গি পরে মাহমুদুর রহমান তখন নাস্তা শেষে চা খাচ্ছিলেন।চা শেষ করার সুযোগ না দিয়েই পুলিশ দশ মিনিটের মধ্যেই অপারেশন শেষ করার তাগিদ দিতে থাকে। তখন মাহমুদুর রহমান তার কক্ষে দু’রাকাত নামাজ পড়ার অনুমতি চাইলে পুলিশ রাজি হয়নি।

amardeshতখন তাকে একখানা ছোট কোরআন শরীফ সঙ্গে নেয়ার অনুমতি দেয়া হয়।

পুলিশ এসময় মাহমুদুর রহমানের ব্যাক্তিগত ডেস্কটপ, কম্পিউটার ও সিসি ক্যমেরায় ধারণকৃত ছবি, মেমোরি কার্ড ও অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নিয়ে যায়। দায়িত্বরত আমারদেশ ফটোগ্রাফার গ্রেপ্তারের ছবি তুলতে চাইলে তাকেও বাধা দেয়া। ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়া হয়। মাহবুব সাংবাদিকদের আরও বলেন, মাহমুদুর রহমান একান্ত আলাপে আমাদের বলেছেন, আমার কাছে সংবাদ এসেছে, আমাকে গুম ও হত্যার চেষ্টা চলছে।

মাহমুদুর রহমানকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপি। তারা এ গ্রেপ্তারকে গণতান্ত্রিক রীতিনীতির পরিপন্থি বলে অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করেছে। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএফইউজে ও ডিইউজে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। সমাবেশে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, সদরুল আমিন, সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ প্রমুখ।

আজ সকাল নয়টার দিকে ‘আমার দেশ’ কার্যালয় থেকে মাহমুদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। সেখান থেকে বেলা আড়াইটার দিকে তাঁকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিমএম) আদালতে হাজির করা হয় বেলা তিনটার দিকে । তেজগাঁও থানায় করা তথ্যপ্রযুক্তি ও রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় ১০ দিন এবং একই থানার আরও দুটি মামলায় সাত দিন করে ১৪ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ।

রিমান্ড শুনানিতে কোনো আইনজীবী নিয়োগ দেননি মাহমুদুর রহমান। তিনি নিজেই আদালতে কথা বলেন। মাহমুদুর বলেন, ‘আমি জানি, এই মামলায় আমাকে জামিন দেওয়া হবে না। রিমান্ড বাতিল করা হবে না। আইনজীবী নিয়োগ দিলে তাঁরা বোকার মতো জামিন চাইতেন এবং রিমান্ড বাতিলের আবেদন করতেন। এই মামলায় আমাকে জামিন দেওয়া হবে না।

শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম সহিদুল ইসলাম ‘আমার দেশ’-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি ও রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় সাত দিন এবং অন্য দুটি মামলায় তিন দিন করে ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। হবে। 

মাহমুদুর রহমানের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে আজ রাজধানীর কামরাঙ্গীচরে খেলাফত আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশ