মেহেরপুর থেকে সংবাদদাতা(০৭/০৭/২০১৪)ঃ মেহেরপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থা ২ বছর ধরে চলছে এডহক কমিটি দিয়ে। এডহক কমিটি গঠনের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের নীতিমালা থাকলেও তা লঙ্ঘন করা হয়েছে। একই পরিবারের তিন জন সদস্য বর্তমানে ক্রীড়া সংস্থা নিয়ন্ত্রণ করছেন। এরা হচ্ছেন ক্রীড়া সংস্থার সদস্য সচিব আতাউল হাকিম লাল মিয়া ও তার ভাগ্নে আনোয়ারুল হক শাহী এবং ভাই এহসানুল কবির।
শাহী ও কবির এডহক কমিটির সদস্য পদে রয়েছেন। এরা কমিটির নিয়মিত কার্যক্রম কিংবা সভা পরিচালনা তোয়াক্কা না করে সকাল থেকে রাত অবধি স্টেডিয়াম ও ডিসি অফিসে পাঁয়তারা করেন। প্রতিটি ক্ষেত্রে তারা জেলা প্রশাসকের দোহাই দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করতে মূল কমিটির কোন সুপারিশ গ্রহণ করেন না। তাই ওই কমিটির কেউ অফিসে যাওয়া-আসা করেন না। কেননা লাল মিয়া ও তার ভাই এবং ভাগ্নের কর্মকাণ্ড ও খেলাধুলার পরিবেশ না থাকায় খেলোয়াড়, ক্লাব কর্মকর্তা সবাই ক্রীড়া সংস্থা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছেন।
জেলার বিভিন্ন মাঠে নিয়মিত টুর্ণামেন্ট পরিচালিত হলেও স্টেডিয়াম মাঠ থাকে খেলোয়াড় শুণ্য। অপরদিকে প্রতিভাবান খেলোয়াড় থাকলেও তারা সুযোগের অভাবে ঝরে পড়ছেন। ওই তিন ব্যক্তিসহ এডহক কমিটির সদস্য ও একজন কোচ মিলে প্রতিবারই জেলা দলের খেলোয়াড় বাছাই করেন। যোগ্যদের বাদ দিয়ে তাদের পছন্দের খেলোয়াড়দের সমন্বয়ে গঠন করা হয় জেলা দল। তাদের এই স্বেচ্ছাচারিতায় হারিয়ে যাচ্ছে প্রতিভাবান খেলোয়াড়। অপরদিকে সুনাম হারাচ্ছে মেহেরপুর জেলা ক্রিকেট কিংবা ফুটবল দল।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালেহ উদ্দীন আহম্মেদ এক সংবাদ সম্মেলনে উপরোক্ত অভিযোগগুলো উত্থাপন করেন। মেহেরপুর পৌর কমিউনিটি হলে আজ শনিবার বেলা এগারটার দিকে অনুষ্ঠেয় ওই সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সহসভাপতি হাজী রজমান আলী, বর্তমান আহবায়ক কমিটির সদস্য শামীম জাহাঙ্গীর সেন্টু, এভন ক্লাবেন সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন, সূর্য তরুণ ক্লাবের সভাপতি শাহিনুর রহমান রিটন, ইমরুল কায়েস ক্রিকেট একাডেমীর পরিচালক মঞ্জুরুল ইসলাম মাঞ্জা, ইয়ং স্টার ক্লাবের সভাপতি শামীমুল ইসলামসহ ক্রীড়া সংগঠক ও খেলোয়াড়বৃন্দ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য ছাড়াও ক্রীড়া সংস্থার বর্তমান এডহক কমিটির সদ্যস্যদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, নিয়মিত টুর্ণামেন্ট কিংবা লীগ আয়োজন না করা, স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বজনপ্রীতির বিভিন্ন অভিযোগ উত্থাপন করেন জেলার বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠকরা।
সূর্য তরুণ ক্লাবের সভাপতি শাহীনুর রহমান রিটন তার বক্তব্যে বলেন, বর্তমান আহবায়ক কমিটির অধীনে ২০১২ সালের ১১ জুন থেকে ২০১৪ সালের জুন মাস পর্যন্ত খেলা পরিচালনার যে তালিকা প্রকাশ করেছে তার বেশিরভাগ মিথ্যা। সবচেয়ে দুঃখজনক হলো ওই কমিটির সদস্যরা ২০১৩ সালের ১ম বিভাগ কিক্রেট লীগ বন্ধ করে স্টেডিয়াম মাঠে যাত্রায় নগ্ন নৃত্যে মেতেছিলেন। যা জেলার ক্রীড়াঙ্গণে কালিমা লেপে দিয়েছে। তাই প্রকৃত ক্রীড়াপ্রেমী ও সংগঠকদের সমন্বয়ে একটি আহবায়ক কমিটির গঠন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচন দাবি করেন তিনি। জেলা প্রশাসকের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে উপস্থিত ক্রীড়া সংগঠকরা আরো বলেন, বারবার জেলা প্রশাসক মাহমুদ হোসেনকে প্রকৃত ঘটনা অবগত করা হলেও তিনি তা কর্ণপাত করেননি। তিনিও একই পরিবারের ওই তিন সদস্যদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে নিরব ভুমিকা পালন করছেন।