নয়ন আমাদের মেহেরপুর ডট কম ঃ মেহেরপুর জেলায় এবছর দুঃস্থ শিল্পীদের ভাতা পাচ্ছেন ৪৩ জন। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ২০১২০-২০১৩ অর্থবছরের ৩-৩৪০১-০০০১-৬৩২১-প্রশংসার যোগ্য ও কৃতিত্বপূর্ণ কাজের জন্য অবসরভাতা প্রদান খাত হইতে ৪ লক্ষ ৬০ হাজার ৮ শত টাকা প্রদান করা হবে মেহেরপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের মাধ্যমে। তার মধ্যে ৪ জন মৃত ব্যক্তি সহ জেলা শিল্পকলা একাডেমীর প্রশিক্ষক ৪ জন, ১ জন নির্বাহী কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ও একই সংগঠন মেহেরপুর থিয়েটারের প্রায় ৮ জন সদস্য।
এ নিয়ে জেলার সাংস্কৃতিক সংগঠন ও কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা দাবী করেছে সরকার দেশের সংস্কৃতিকে এগিয়ে নেয়ার লক্ষে বিভিন্ন উন্নয়ন সহ দেশের সুযোগ বঞ্চিত দুঃস্থ শিল্পীদের মানোন্নয়ন ও পিছিয়ে পড়া থেকে বের করে আনতেই কোটি কোটি টাকা অনুদান হিসাবে দিচ্ছে। সেই টাকা মেহেরপুর শিল্পকলা একাডেমীর কর্মকর্তারা দুঃস্থ শিল্পীদের নামে মৃত ব্যক্তি সহ স্বচ্ছল চাকুরীজীবি ও ব্যবসায়ীদের দেয়া হচ্ছে দীর্ঘদিন যাবৎ। যার ফলে প্রকৃত দুঃস্থ শিল্পীরা সরকারের এই মহৎ প্রয়াস থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কতিপয় লুটপাটকারীদের কারণে। এতে সরকারের উদ্দেশ্য ব্যহত হচ্ছে।
জানা গেছে, উক্ত তালিকার মধ্যে রয়েছে ৪ জন মৃত ব্যক্তির নাম যারা হলেন, মেহেরপুর পৌরসভার কাশ্ব্যবপাড়ার জামাল ফকির, ৭নং ওয়ার্ডের একরামুল হক, গোভীপুরের আঃ আজিজ এবং রামদাসপুরের জামালউদ্দিন। জেলা শিল্পকলা একাডেমীর নির্বাহী কমিটির যুগ্ম সম্পাদক আঃ ওয়াদুদ, শিল্পকলা একাডেমীর ৪ জন প্রশিক্ষক এখলাছুর রহমান টাবলু, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী খন্দকার জামশেদ আলী, বিশ্বনাথ ভৌমিক ও শহরের বিশিষ্ট চিকিৎসক মৃত ডাঃ বাকীর কন্যা মেহেরপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শাফিনাজ আরা ইরানী। এছাড়া একই সংগঠন মেহেরপুর থিয়েটারের সদস্য হিসাবে ভাতা পেয়েছেন মৎস্য ব্যবসায়ী শ্রী গোবিন্দ চন্দ্র হালদার, ঠিকাদার আঃ ওয়াদুদ, লাল্টু মন্ডল, মীর ফারুক হোসেন, মৎস্য ব্যবসায়ী কার্তিক চন্দ্র হালদার, মৎস্য ব্যবসায়ী শ্রী গোবিন্দ রায়, মৎস্য ব্যবসায়ী শৈলেন চন্দ্র হালদার, লাল মহাম্মদ লালু। অভিযোগ পাওয়া গেছে দুঃস্থ শিল্পী নয় এমন প্রায় ১০ জনের নাম উক্ত তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। এ ব্যাপারে দুঃস্থ শিল্পী শহরের পরিচিত মুখ সেলিনা খাতুন শেলী জানান, আমি মেহেরপুর শিল্পকলা একাডেমীর একজন নিয়মিত শিল্পী। আমি সরকারের বিভিন্ন জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করে থাকি। আমি যে অস্বচ্ছল তা মেহেরপুরের শিল্পকলা একাডেমীর কমিটি সহ বিভিন্ন সংগঠনের কর্মকর্তা জানেন। অথচ আমার নাম বাদ দিয়ে শিল্পকলা একাডেমীর কতিপয় কর্মকর্তা যাদের দুতলা- তিনতলা বাড়ী, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সহ প্রচুর জমিজমার মালিক তাদের নাম দুঃস্থ শিল্পীর তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করায় আমি তাদের বিচার দাবী করছি। এ ব্যাপারে বাসুদেব অপেরা ও তরুন সাথী টাউন ক্লাবের যাত্রাশিল্পী নুরুল ইসলাম ক্ষোভের স্বরে বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ আমি মেহেরপুরের আনাচে কানাচে যাত্রা থিয়েটারে অভিনয় করে এসেছি। বর্তমানে আমার অস্বচ্ছল পরিবার নিয়ে কোন রকমে বেঁচে আছি। সরকারের দুঃস্থ শিল্পীদের বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থে কিছু অনুদানের ব্যবস্থার কথা শুনে আসছি। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেই স্বাদ গ্রহন করতে পরিনি।এ বিষয়ে সঠিক অনুসন্ধান করে প্রকৃত দুস্থ শিল্পীদের তালিকা তৈরির মাধ্যেমে পিছিয়ে পড়া মেহেরপুরের সংস্কৃতি অঙ্গনকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক সহ প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ কমনা করছে সাংস্কৃতিক কর্মীরা।