নয়ন আমাদের মেহেরপুর ডট কমঃমেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বামন্দী বাজারে অবস্থিত বেসরকারী সংস্থা এভারগ্রীণ কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শরিফুল ইসলাম প্যারিশ গ্রাহকবৃন্দের আমানতের প্রায় দুই কোটি পঞ্চাশ লক্ষ টাকা নিয়ে উধাও হয়েছেন। এমডি প্যারিশের ব্যবহৃত তিনটি মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার সাথে কারো পক্ষে যোগাযোগ করাও সম্ভব হচ্ছেনা। তার কোন হদিস না পেয়ে অবশেষে প্রতিষ্ঠানটির বামন্দী শাখার ব্যবস্থাপক আব্দুর রশিদ বাদী হয়ে গাংনী থানায় ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরিফুল ইসলাম প্যারিশকে আসামী করে একটি প্রতারণার মামলা দায়ের করেছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গাংনী উপজেলার বামন্দী গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে শরিফুল ইসলাম প্যারিস আড়াই বছর আগে বামন্দী বাজারে এভারগ্রীণ কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড নামের একটি মাল্টিপারপাস ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করেন। পরবর্তীতে তিনি একই নামে গাংনী, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গাতে আরো ছয়টি শাখা অফিস খোলেন, যা এখনও চালু রয়েছে। এ সমস্ত অফিসে বেশ কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয় এবং প্রত্যেকের নিকট থেকে জামানত হিসাবে ৫ লক্ষ করে টাকা আদায় করা হয়। এছাড়া এক লক্ষ টাকার বিপরীতে প্রতি মাসে দুই হাজার টাকা করে লভ্যাংশ প্রদান করা হবে বলে এলাকার শত শত গ্রাহকবৃন্দের নিকট থেকে তিনি বিভিন্ন সময়ে কয়েক কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করেন। এর মধ্যে শুধুমাত্র বামন্দী শাখায় প্রায় আড়াইশ গ্রাহকের নিকট থেকে ২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা আমানত আদায় করা হয়। উক্ত ব্রাঞ্চের আড়াই কোটি টাকা নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শরিফুল ইসলাম প্যারিশ গত ১১ ডিসেম্বর দুপুর থেকে আত্মগোপন করেন। তার উধাও হবার ঘটনা জানাজানি হবার পর থেকে গ্রাহকরা সংস্থাটির ব্যবস্থাপক আব্দুর রশীদকে আমানতের অর্থ ফেরত প্রদানের জন্য চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছেন। এমতঃ অবস্থায় গ্রাহকরা চরম হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন। সংস্থাটির ব্যবস্থাপক আব্দুর রশীদ জানান, তার নিজের এবং আত্মীয় স্বজনদের দেয়া ত্রিশ লক্ষ টাকা আমানত হিসাবে ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরিফুল ইসলাম প্যারিশের নিকট জমা রেখেছেন। এ ঘটনায় ব্যবস্থাপক আব্দুর রশীদ গাংনী থানায় প্রতারণার অভিযোগে একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন। সরেজমিনে গিয়ে আরো জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের কোন ধরণের অনুমতি না নিয়েই শুধুমাত্র স্থানীয় জেলা সমবায় অধিদপ্তর থেকে লাইসেন্স প্রাপ্ত হয়ে মেহেরপুর, গাংনী, বামন্দীসহ বিভিন্ন এলাকায় এভারগ্রীণ কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড নাম দিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে বসেছেন। উচ্চহারে সুদ বা লভ্যাংশ প্রদানের লোভ দেখিয়ে এ প্রতিষ্ঠান শত শত গ্রাহকদের নিকট থেকে কোটি কোটি টাকা ইতোমধ্যে হাতিয়ে নিয়েছেন। এ প্রতিষ্ঠান থেকে আমানতকারীদের এক লক্ষ টাকার বিপরীতে মাসিক লাভ দেয়া হয় দুই হাজার টাকা। অতি মুনাফার লোভে ভবিষ্যতের চিন্তা না করেই অনেকেই লক্ষ লক্ষ টাকা বিনিয়োগে করেছেন। গ্রাহকদের অনেকেই জানান, তারা অনেকেই সহায় সম্বল বিক্রি করে মোটা টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এ টাকা খোয়া গেলে আত্মহত্যা ছাড়া কোন উপায় থাকবে না। গাংনী থানার ওসি (তদন্ত) মহিউদ্দিন জানান, অভিযোগ পাওয়া গেছে তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।