বর্তমান সরকার স্বচ্ছ নির্বাচনের ফল নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে–সবচেয়ে বড় হুমকি এর দূষিত রাজনীতি।

বর্তমান সরকার স্বচ্ছ নির্বাচনের ফল নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে–সবচেয়ে বড় হুমকি এর দূষিত রাজনীতি।

আমাদের মেহেরপুর ডট কমঃ66283_ad

যে কোন দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে  মানুষ তার সঠিক পথের দিকে এগিয়ে যায় । কিন্তু আমাদের দেশে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে সর্ব্বোচ্চ এক থেকে দেড় সপ্তাহ সারাদেশ জুড়ে সমালেচনা আলোচনা ঝড় ওঠে। নিহত বা আহত মানুষগুলো বাস্তব অবস্থা বা পরিস্থিতি কি তারা কেমন আছে সে খোজ কেও নেয় না ্। সেমিনার বা সিম্পোজিয়ামে বা কখনও রাজপথে সরাগম হয়ে ওঠে কিন্তু সমস্যা  চিহ্নিত বা সমাধান  কোনটায় হয়ে ওঠে না । ধুকে ধুকে মরে ্সব আহত ও নিহতের স্বজনেরা । তেমনি রানা প্লাজায় ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনায় লাশের মাতম দেখে অনেকে আবেগপ্লাতু হয়ে অনেক কথা বলেছিল । বিশ্বেও ঘটে যাওয়া শিল্প দুর্ঘটার অন্যতম ছিল রানা প্লাজার ভবন ধ্বসের ঘটনা সেখানে  ২৪৩৮ জনকে জীবীত উদ্ধার  ও লাশ উদ্ধার ১০২৪ জন ২৫৯ জনকে আন্জুমান দাফন  সহ নিখোজ ৬শরও বেশী তাদের ঈদ হয়েছে কিনা  বা কেমন আছে তারা ? খোজ নেবার তেমন জোরালো পদক্ষেপ চোখে পড়ে না  । সেই দুঘটনায় আহত মনোয়ার ১০৮ দিন লড়াই করে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে ফিরে গেলেন অজানার দেশে । রংপুর জেলার মিঠাপুবুর উপজেলার যাদবপুর গ্রামের আবুর হোসেনের ছেলে মনোয়্রা হোসেন (২২) ।

তবে রানা প্লাজার ভবন ধবস বাংলাদেশের অর্থনীতির গতি থমকে দেয়নি অথবা বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক গার্মেন্ট বাণিজ্যকেও খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্থ করেনি। কিছু দূর্ঘটনা বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি নয়, বরং সবচেয়ে বড় হুমকি এর দূষিত রাজনীতি। আগামী জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু পূর্বাভাস রয়েছে দুই নেত্রী এবং তাদের দলের মধ্যে শান্তি রক্ষার জন্য একটি সামরিক সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করবে। এবং রাজপথে ইসলামপন্থী প্রতিবাদীদের সঙ্গে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বর্তমান সংঘাত শুধুমাত্র রাজনীতিবিদদের দৃষ্টি গার্মেন্ট ইস্যুর মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় থেকে সরিয়ে নিয়ে গেছে।
বৃটিশ দৈনিক দ্যা ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনটির শিরোনাম ছিল ‘বাংলাদেশ পিনড ব্যাক বাই পলিটিক্স’।

পশ্চিমের চোখে একসময় বাংলাদেশের পরিচয় ছিল ক্ষুদা আর দারিদ্র্যের জন্য। স্বাধীনতার তিন বছরেরও কম সময়ের মধ্যে ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশের সে পরিচয়কে আরও গাঢ় করে। বাংলাদেশের অর্থনীতি যে এখন এশিয়ার অন্যতম বর্ধনশীল অর্থনীতি এ ব্যাপারে বাইরের বিশ্বের অনেকেই অবগত নন। অনেক সামাজিক খাতে বাংলাদেশ তার প্রতিবেশি রাষ্ট্র ভারতকেও অতিক্রম করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আর শিল্পোউদোক্তরা মনে করেন, রানা প্লাজা ধবস হচ্ছে জেগে ওঠার বার্তা এবং এ বার্তা প্রয়োন ছিল। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী এ প্রসঙ্গে বলেন, গার্মেন্ট শিল্প হচ্ছে সোনার ডিম পাড়া রাজহাঁস এবং কেউই তা হত্যা করতে চাইবে না। আমাদেরকে গ্লোবাল প্লেয়ার হিসেবে আচরণ করা উচিত।

কাদের নামে এক উদ্যেক্তা বলেন, বাংলাদেশের জিডিপি খুব সহজেই ৮-৯ ভাগ হতে পারতো কিন্তু তা  হচ্ছে না রাজনীতির কারণে কারণে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ এবং খালেদা জিয়ার বিএনপির মধ্যে আদর্শগত তফাত খুবই সামান্য। এটা দুই পরিবারের বিষয়। এখানে কোন ধর্ম, বর্ণ, আদর্শ এবং আঞ্চলিকতার ইস্যু নেই, এমনকি রাজনীতির ইস্যুও নেই। এটা শুধুই তাদের ব্যক্তিত্বের সংঘাত।

সমালোচকরা বলে থাকেন, বর্তমান সরকারের আমলে তার বিস্তৃতি এত ব্যাপক যাতে সরকারের জনপ্রিয়তা তলানিতে নেমেছে।দুর্নীতির বিস্তার সর্বোচ্চ শিখরে পেীঁছেছে। এমনকি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনার প্রতি সহর্মমীরাও বলে থাকেন, শেখ হাসিনা রাজনীতিতে খারাপ উদাহরণ তৈরি করছেন।বাংলাদেশের রাজনীতির সবচেয়ে বড় রোগ হচ্ছে এখানে বিজয়ীরা সব কিছুই নিয়ে নেয়। ক্ষমতায় থাকা রাজনীতিবিদরা তাদের প্রতিপক্ষকে দমন করেন এবং নিজেরা দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন।  বর্তমান সরকার স্বচ্ছ নির্বাচনের ফল নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।

(দৈনিক দ্যা ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদন)

আন্তর্জাতিক