মেহেরপুর প্রতিনিধি(১২/০৮/১৪)ঃ গাংনী উপজেলার ষোলটাকা গ্রামের বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের পথ না থাকায় দু শতাধিক পরিবার এখন পানিবন্দি। জলাবদ্ধতা সৃষ্টির কারনে ভুক্তভোগীরা মানবেতর জীবন-যাপন করছে। ভুক্তভোগীরা মানবেতর জীবন-যাপন করলেও সহসায় ভোগান্তি থেকে মুক্তি মিলছে না। এরাকাবাসী সূত্রে জানা যায়- জেলায় যে গ্রামটি মৎস্য চাষে বিপ্লব ঘটিয়েছে এ অঞ্চলে তার নাম গাংনী উপজেলার ষোলটাকা। গাংনী উপজেলা শহর থেকে মাত্র ৮ কিলোমিটর পূর্ব দিকে গ্রামটির অবস্থান। এলাকায় পাঙ্গাস মাছের গ্রাম হিসেবে পরিচিত থাকলেও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে যত্রযত্র পুকুর খনন করে মাছচাষ করা হচ্ছে। এতে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় গ্রামের মানুষ অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক সমৃদ্ধ হলেও জলাবদ্ধতা পিছু ছাড়ছে না। ষোলটাকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফিস ফিড মিলসহ সর্দ্দারপাড়ার দু শতাধিক পরিবার বর্ষা এলেই জলাবদ্ধার শিকার হচ্ছে। এতে স্বাভাবিক জীবন-যাপন চরমভাবে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। ষোলটাকা-বানিয়াপুকুর সড়কের বেশিরভাগই দু-তিন ফুট পানির নিচে থাকে ।ফলে এলাকার মানুষ ও মাছ ব্যাবসায়ীরা মাছ ও মাছের পোনা আনা-নেয়া করার জন্য স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারছে না । স্থানীয় লোকজন জানান, বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ ছিল গ্রামের পূর্ব দিকে অবস্থিত কৈকুড়ির বিল। বিলটি ছেউটিয়া নদীর সাথে সংযোগ রয়েছে। কিন্তু গত কয়েক বছর আগে পানি নিষ্কাশনের পথে ষোলটাকা ও কাষ্টদহ এ দুই গ্রামের ৭/৮জন জমির মালিক তাদের নিজ নিজ জমিতে পুকুর খনন করে মাছ চাষ করছেন। এতে গ্রামের পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। তাই জৈষ্ঠ্য মাস থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। আশেপাশে হাঁটু পানি থাকায় কয়েকটি মিল ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করতে পারছে না অভিভাবকরা বিপাকে পড়েছেন। অন্যদিকে মিলে উৎপাদিত মাছের খাবার বিক্রি কার্যক্রমও চরমভাবে বিঘিœত হচ্ছে। গ্রামবাসীদের দাবী উপেক্ষিত করে পুকুর মালিকরা পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে রেখেছেন। তাদের দাবী পুকুরের সাথে পাইপলাইনের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশনের পথ তৈরি করে ভুক্তভোগীদের বাচাতে পারেন পুকুর মালিকেরা। ষোলটাকা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ময়নাল হক জানান, এখানে প্রচুর পুকুর ও মৎস্য খামার রয়েছে। প্রায় ২৪ ঘণ্টা ওই গ্রামে মাছ ও মাছের পোনা কেনাবেচা হয়। কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহসহ কয়েকটি জেলায় পাঙ্গাস মাছ ও পোনা সরবরাহ করা হয়। কিন্তু জলাবদ্ধতার কারণে তা বিঘিœত হচ্ছে। তবে ইউনিয়ন পরিষদের অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতার কারণে জলাবদ্ধতা নিরসন সম্ভব নয়। গাংনী উপজেলা মৎস্য অফিসার আবুল কালাম জানান ষোলটাকা গ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে উদ্যোগে নেয়া হবে ।