নিউজ ডেস্ক: জোটনিরপেক্ষ আন্দোলন তথা ন্যাম শীর্ষক সম্মেলনকে আর্ন্তজাতিক অঙ্গনে নিজেদের তুলে ধরার প্রয়াস হিসেবে বিবেচনা করেছে ইরান। সম্মেলনে বিশ্বের ১২০টি দেশের প্রতিনিধি ও সরকার প্রধানের অংশ নেওয়াকে দেশটির বিশাল কূটনৈতিক জয় এবং যুক্তরাষ্ট্রকে পাল্টা জবাব দেওয়া বলে মনে করে ইরান। কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, সম্মেলনের শেষ দিন দেশটির বিতর্কিত পরমাণু ইস্যুতে জাতিসংঘের আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রতিবেদন ন্যাম সম্মেলনে ইরানের অর্জন ম্লান হয়েছে। খবর এএফপি, রয়টার্স।
মিসরের প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মুরসি এবং জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন ইরানের নীতির সমালোচনা করলেও ইরানি নেতা এবং গণমাধ্যম সম্মেলনকে ইরানের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় কূটনৈতিক জয় বলে অভিহিত করে। এমনকি এবারের ন্যাম সম্মেলন নিয়ে বেশ সোচ্চার ছিল আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমও। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ সম্মেলনের মাধ্যমে ইরান তাদের কূটনৈতিক সক্ষমতা প্রকাশ করেছে। এমনকি প্রমাণ করেছে তাদের একঘরে করে রাখার যুক্তরাষ্ট্রের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। ব্রিটেনভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটিজিক স্টাডির গবেষক দিনা এসফানদিয়ারি বলেন, ‘বিচ্ছিন্ন করার জোর প্রয়াস সত্ত্বেও ইরান এখনও একটি বিশাল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক অংশীদার এবং তাদের যে আঞ্চলিক প্রভাব রয়েছে সম্মেলনের মাধ্যমে তা প্রমাণে সক্ষম হয়েছে তেহরান।
একই সময়ে দেশটি তাদের পরমাণু সক্ষমতা দ্বিগুণ বৃদ্ধি করেছে_ আইএইএর এমন প্রতিবেদনে কিছুটা ম্লান হয়েছে ন্যাম সম্মেলনে ইরানের অর্জন। ওয়াশিংটনভিত্তিক থিঙ্কট্যাঙ্ক কার্নেগি এন্ডুমেন্টের পরমাণু বিশ্লেষক ম্যাক ম্যাক হিবস বলেন, ‘কোনো কোনো সময় কিছু আন্তর্জাতিক সম্মেলন তার সময়সীমা এবং সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কারণে ব্যতিক্রমী হয়ে উঠে। এবারের ন্যাম সম্মেলন সে রকমই একটি। তবে এই সম্মেলনে পুরোপুরি জয়লাভ করেনি ইরান। একইসঙ্গে সমালোচনার সম্মুখীনও হয়েছে তারা’।
তবে বিশ্লেষক দিনা এসফানদিয়ারি বলেন, ‘এ জন্য প্রস্তুত ছিল ইরান। কারণ তারা জানত আন্তর্জাতিক নেতাদের কারও কারও সমালোচনার মুখে পড়তে হবে তাদের। তবে আইএইএ প্রতিবেদন প্রকাশ করে ন্যাম সম্মেলন থেকে সবার মনোযোগ সরিয়ে দিয়েছে।’ ইরানভিত্তিক আরব সেন্টার অব ইরানিয়ান স্টাডিজের বিশ্লেষক মোহাম্মদ সালেহ সাদগাহি বলেন, ‘ইরান যে সুরে কথা বলবে সবাই সে সুরে সুর মেলাবে, কেউ নিশ্চয় এমনটি প্রত্যাশা করবে না, এমনকি ইরানও না।’ অন্যদিকে কোনো কোনো বিশ্লেষক বলছেন, ন্যাম সম্মেলনের মাধ্যমে ইরানের লাভ হবে ক্ষণস্থায়ী। থিঙ্কট্যাঙ্ক র্যান্ড করপোরেশনের বিশ্লেষক আলিরেজা নাদের বলেন, ‘এ সম্মেলনের মাধ্যমে ইরান সাময়িকভাবে লাভবান হয়েছে কিন্তু আমি মনে করি না দেশটি এ সম্মেলনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিকভাবে নিজেদের অবস্থা সংহত করতে সফল হবে।’
২০১৫ ন্যাম সম্মেলন ভেনিজুয়েলায়
শুক্রবার ন্যাম সম্মেলনের শেষ দিনে আগামী ন্যাম সম্মেলনের ভেন্যু হিসেবে ভেনিজুয়েলাকে নির্বাচিত করা হয়েছে। শুক্রবার সম্মেলন শেষে এ কথা জানান ভেনিজুয়েলার পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোলাস মাদুরো। তেহরানে একটি টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ২০১৫ সালে ন্যামের ১৭তম সম্মেলন ভেনিজুয়েলার রাজধানী কারাকাসে অনুষ্ঠিত হবে। শুক্রবার সম্মেলনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ। সমাপ্তি বক্তৃতায় আহমাদিনেজাদ এ সম্মেলনকে ঐক্য ও সংহতির প্রতীক বলে উল্লেখ করেন।
Yup, that souhld defo do the trick!