দেশে ‘বিপর্যয়’ নেমে এসেছে চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে দুই প্রধান দলের নেত্রীকে  চিঠি

দেশে ‘বিপর্যয়’ নেমে এসেছে চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে দুই প্রধান দলের নেত্রীকে চিঠি

আমাদের মেহেরপুর ডট কম

প্রায় অভিন্ন ভাষায় লেখা দুটি চিঠি  এরশাদ দেশের চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়াকেthree ledar দিয়েছেন  । গত ৭ই এপ্রিল দূত মারফতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ও বিরোধী নেত্রীর গুলশানের কার্যালয়ে পৌছে দেয়া হয়।

সংকট মোচনে আলোচনায় বসার তাগিদ দিয়ে দুই প্রধান দলের নেত্রীকে বলেন, ‘আমি আজ বয়সের শেষ প্রান্তে পৌঁছেছি। এই দিগন্তে দাঁড়িয়ে ভারাক্রান্ত মনে আপনাদের কাছে একান্ত প্রার্থনা জানাই—এই মুহূর্তে কোনো হিংসা বা জেদ নয়, ত্যাগের মহিমায় উজ্জ্বল হয়ে এগিয়ে আসুন সংকট মোচনের আলোচনায়। শান্তির পথে উদ্যোগ নিয়ে ইতিহাসে সমৃদ্ধ হয়ে থাকুন। দিশেহারা জাতি একান্তভাবে কামনা করছে, আপনারা প্রধান দুটি দলের দুই সম্মানিত নেত্রী একত্রে বসুন— আমিও আপনাদের পাশে থাকব।’

আপনি শুধু দেশের প্রধানমন্ত্রীই নন- আমার কাছে আপনার তারচেয়েও বড় পরিচয় আপনি এদেশের জাতির জনকের কন্যা এবং অতিব ধর্মপ্রাণ মুসলিম নারী। দলীয় এবং রাষ্ট্রীয় পদ পরিচয় এক সময় সাবেক হয়ে যায়-  কিন্তু জাতির জনকের কন্যা এই পরিচয় আপনার চিরদিনের। তেমন এক নেত্রী হিসেবে এই দেশ ও জাতির জন্য আপনার মমত্ববোধ আমি গভীরভাবে উপলব্ধি করি। দেশে এখন যে পরিস্থিতি চলছে এবং জাতির সামনে যে দুর্যোগ বিরাজ করছে তা নিয়ে আপনি কতটা বিচলিত হতে পারেন আমি তাও অনুভব করি। আমি একান্তভাবে বিবেকের তাড়না

অন্যদিকে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে লেখা চিঠিতে এরশাদ বলেন, ‘আপনার দেশপ্রেম আমার কাছে প্রশ্নাতীত। সেই বিশ্বাস এবং আস্থা রেখেই দলীয় গণ্ডি পেরিয়ে আপনাকে এই নিবেদন করছি যে, আসুন এবার বিগত দিনের সকল তিক্ততা মুছে দিয়ে এবং ভুলে গিয়ে দেশে বিরাজমান সংকট উত্তরণের উপায় খুঁজে বের করি। আমি বিশ্বাস করি, সংকট যত তীব্র হয়, সমাধানের তাগিদ তত প্রবল হয়। আজকের প্রেক্ষাপটে এটা সর্বজনবিদিত যে, স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে এত বড় রাজনৈতিক সংকট ইতিপূর্বে আর কখনো ঘটেনি।’

মাননীয় নেত্রী, আপনি দেশ পরিচালনা করছেন এবং আল্লাহপাক চাইলে আগামীতেও দেশ পরিচালনা করবেন-  কিন্তু দেশ যদি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়-  আমাদের রাজনীতির কী অর্থ থাকতে পারে! দেশের বর্ণনাতীত ভয়াবহ পরিস্থিতির কারণে, মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে, অর্থনীতি পর্যুদস্ত হচ্ছে, অর্থনৈতিক নির্ভরতার গার্মেন্টস শিল্প এখন ধ্বংসের দারপ্রান্তে। জনগণের কোন নিরাপত্তা নাই-  শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে- স্বাস্থসেবা চলছে না। রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করা হচ্ছে। গোটা জাতির জীবনে নেমে এসেছে চরম হতাশা, নৈরাজ্য এবং গণতন্ত্র বিকাশের কথা এখন স্বপ্ন বিলাসে পরিণত হয়েছে। হিংসার রাজনীতির কারণে, মানুষের মানবিকতাবোধ লোভ পাচ্ছে। যেভাবে মানুষ মরছে এবং মারছে সে দৃশ্য আমাদের সভ্যতার মুখে কালি লেপে দিচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা-  মিডিয়ার আধিপত্যের এই যুগে আমাদের রাজনীতির ভয়ঙ্কর ও বর্বর চিত্র বিশ্ববাসী অবলোকন করছে। দুনিয়ার কাছে আমরা ঘৃণা আর ছিঃছিঃ কুঁড়াচ্ছি। মাননীয় নেত্রী, একবার ভাবুন, ক্ষমতায় থাকা এবং যাওয়াই কি বড় কথা? দেশ এবং দেশের ১৬ কোটি মানুষের ভাগ্য কি আমাদের কাছে বড় নয়? আমি আজ বয়সের শেষ প্রান্তে পৌঁছেছি।

এরশাদ দেশের চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট বলেন ‘গণতন্ত্রের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আসুন আমরা সবাই একসাথে বসে এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের উপায় বের করি। আর সেই উদ্যোগটা আসুক সবার আগে আপনারই পক্ষ থেকে।’ত্র“টি-বিচ্যুতির কথা না হয় এই মুহুর্তের জন্য ভুলে গেলাম- সবার আগে জনগণের শান্তি- নিরাপত্তা, দেশের অর্থনীতি, গণতন্ত্রের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আসুন আমরা সবাই একসাথে বসে এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের উপায় বের করি।

বাংলাদেশ