দলীয় সরকাকোরের অধীনে বিরোধী দল নির্বাচনে অংশ নেবে না।” সমঝোতাই সমাধানের পথ– বিরোধী নেতা বেগম খালেদা জিয়া।

দলীয় সরকাকোরের অধীনে বিরোধী দল নির্বাচনে অংশ নেবে না।” সমঝোতাই সমাধানের পথ– বিরোধী নেতা বেগম খালেদা জিয়া।

kh a Zia”   দলীয় সরকাকোরের অধীনে বিরোধী দল নির্বাচনে অংশ নেবে না।”–   বিরোধী নেতা বেগম খালেদা জিয়া। গতকাল জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধী নেতা তার বক্তব্যে সামপ্রতিক রাজনীতি, অর্থনীতি ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেছেন গায়ের জোরে সঙ্কটের সমাধান হবে না। নির্দলীয় সরকার গঠনের জন্য সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে। সমঝোতাই সমাধানের পথ।

বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারের কড়া সমালোচনা করলেও গতকাল সংসদের পরিবেশ ছিল প্রাণবন্ত। বিরোধী নেত্রী বক্তব্য রাখার সময় সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী তার আসনে বসে নোট নেন। আবার সংসদ নেতা বক্তব্য রাখার সময় বিরোধী নেত্রীও তা শোনেন। খালেদা জিয়া প্রায় এক ঘণ্টা ৫৫ মিনিট বক্তব্য রাখেন। সাম্প্রতিক সময়ে সংসদে দুই দলের এমপিদের অসংসদীয় ভাষায় দেয়া বক্তব্য ও তার নেপথ্যে সংসদ নেতার ভূমিকার ইঙ্গিত করে তিনি নীরবতার মাধ্যমে তার জবাব দেয়ার কথা জানান।

বর্তমান সরকারের মেয়াদ সাড়ে চার বছরেরও বেশি অতিক্রান্ত হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনের সময় দ্রুত এগিয়ে আসছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ফয়সালা হলো না  নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা কি হবে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার স্বার্থে সকল দলের অংশগ্রহণে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোন বিকল্প নেই। আমরা বার বার বলেছি, একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই নির্বাচন হলে সকল দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে-  তিনি এসব কথা বলেন।

  বিরোধী নেতা বেগম খালেদা জিয়া  বলেন। –১৯৯৬ সালে যে কারণ ছিল সে কারণগুলো এখনও বিদ্যমান, বরঞ্চ পরিস্থিতি আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে সব চাইতে বড় সমস্যা হলো, আস্থার সঙ্কট। এই আস্থার সঙ্কট যতদিন থাকবে ততদিন দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। শাসক দলের পক্ষ থেকে যুক্তি দেখায় স্থানীয় সরকার নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ায় তাদের অধীনেই জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।

খালেদা জিয়া বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আজ যে রাজনৈতিক সঙ্কট ঘনীভূত হয়ে উঠেছে তার উৎপত্তি সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারবিষয়ক মামলাকে কেন্দ্র করে যে ৮ জন এমিকাস কিউরি নিয়োগ করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে ৭ জন এবং সংসদের সংবিধান সংশোধন কমিটির আহ্বানে সুধী সমাজের মতামতে সবাই এক বাক্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিধান বহাল রাখার পক্ষে মত দেন। এই কমিটি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে মত দিয়েছিলো। আপিল বিভাগের সংক্ষিপ্ত রায়ে জাতীয় ও জননিরাপত্তার স্বার্থে এবং রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনের নিরিখে অন্তত পরবর্তী দুই মেয়াদ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে মত ব্যক্ত করা হয়েছিলো। তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতির অবসর গ্রহণ এবং সংক্ষিপ্ত রায় ঘোষিত হওয়ার ষোল মাস পর যে পূর্ণাঙ্গ রায় দেয়া হয় সে রায়ও সর্বসম্মত ছিল না। অবসর গ্রহণের ষোল মাস পর রায় লেখা একটি নজিরবিহীন ঘটনা। তিনি বলেন, নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার সংক্রান্ত ইস্যুর নিরসন ক্ষমতাসীন সরকারকেই করতে হবে। কারণ সাংবিধানিক সংশোধনী আনার মতো বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা বর্তমান সরকারেরই আছে, বিরোধী দলের নেই।

পদ্মা সেতুর মাধ্যমে সরকার কলঙ্ক তিলক এঁকেছে

দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ সুবিধা সম্প্রসারণে পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণের বিকল্প নেই। কিন্তু পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের কারণে এ সরকার বাংলাদেশের ললাটে কলঙ্কতিলক এঁকে দিয়েছে। বিশ্বব্যাংক, জাইকা, এডিবি, আইডিবিসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ভূলুণ্ঠিত হয়েছে। সরকার অস্বীকার করলেও কানাডার আদালতে চলমান বিচার প্রক্রিয়ায় থলের বিড়াল বেরিয়ে পড়তে শুরু করেছে। বাংলাদেশ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের এবং তাদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-স্বজন কে কত শতাংশ পাবেন বা পেতে যাচ্ছেন তার হিসাব দেশী-বিদেশী মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারের বর্তমান মেয়াদেই পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। পদ্মা সেতুর অর্থায়নের জন্য কোন বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ না করে এ অর্থবছরে বাজেটে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেখানো হয়েছে। অথচ স্বল্প সুদে বিকল্প অর্থায়নের ব্যবস্থা করলে আমরা এই অর্থ দেশে জনকল্যাণমূলক অন্য খাতে ব্যবহার করতে পারতাম।

বাংলাদেশ