আমাদের মেহেরপুর ডট কম ঃ মঙ্গলবার জামাতের ডাকে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের সমর্থনে মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর-মুজিবনগর সড়ক অবরোধ করেছে ইসলামী ছাত্র শিবির। ভোর সাড়ে ৪টার দিক থেকে মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কের রাজনগর ঘোড়ামারা ব্রীজের ওপর ও মেহেরপুর-মুজিবনগর সড়কের বন্দর এলাকায় তিন ঘন্টা ব্যাপি সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন নেতাকর্মীরা। পরে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে।
রাস্তার দুপাশে আটকে পড়া পরিবহন যাত্রীরা ক্ষোভের স্বরে জানান, ভোর থেকেই মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কের ঘোড়ামারা ব্রীজ সংলগ্ন রাস্তার দুপাশে সুবাহ সামাজিক সংস্থার লাগানো সহস্রাধিক মূল্যবান আম ও লিচু গাছ কেটে রাস্তার উপরে ফেলে এবং প্রচুর ইট ব্রীজ সহ রাস্তার উপরে খামাল দিয়ে রাখে। এছাড়াও জামাত-শিবিরের শতাধিক নেতাকর্মী রাজনগর, পিরোজপুর, ধানধোলা, আযান, সিংহাটী সহ বিভিন্ন গ্রাম থেকে রামদা, হাসুয়া, চাকু, পাথর সহ অন্যান্য অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে ঘন্টার পর ঘন্টা মহড়া করতে থাকে। সে সময় ঐ রাস্তায় চলাচলরত আলগামন, নছিমন, করিমন, পাওয়ার ট্রিলার সহ পরিবহনগুলোতে হামলা চালায়। এতে যান চলাচল সম্পূর্নরূপে বন্ধ হয়ে যায়।
এ ব্যাপারে ঢাকা থেকে মেহেরপুরগামী যাত্রী রুপা খাতুন জানান, জামাত-শিবিরের প্রকাশ্য তান্ডবে রাজনগর সহ আশেপাশের ৭/৮টি গ্রামের বাজার স্তব্ধ হয়ে পড়ে এবং রাস্তার দুপাশে আটকা পড়ে শতাধিক গাড়ী। বারাদী পুলিশ ক্যাম্প সহ মেহেরপুর সদর থানার বিভিন্ন কর্মকর্তাকে ফোন মারফতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের কথা বললেও তারা আসেন ঢিমেতালে। এর ভিতরে জামাত-শিবিরের সশস্ত্র ক্যাডাররা মুখে কাপড় বেধে তান্ডবলীলায় মেতে ওঠে। এক পর্যায়ে সকাল ৭ টায় পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও অবরোধ তুলতে ব্যার্থ হয়। পরে প্রচুর সংখ্যক পুলিশ এসে বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে, এসময় পুলিশ-শিবির ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। এক পর্যায়ে শট গানের ১০/১২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষন করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াজুল ইসলাম জানিয়েছেন সড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে। তবে কোন জামাত-শিবিরের নেতাকর্মীকে অদৃশ্য কারণে আটক করেনি পুলিশ।
এদিকে সকাল সাড়ে সাতটার দিকে মুজিবনগর সড়কের অবরোধ শুরু করে জামাত-শিবিরের নেতাকর্মীরা। পরে পুলিশ যেয়ে বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে। উল্লেখ্য রোববার হরতালের দিনেও দুটি প্রধান সড়ক অবরোধ করেছিল জামাত-শিবির নেতাকর্মীরা। এ ব্যাপারে সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব গোলাম রসুল সাংবাদিকদের জানান, গত দুইদিন মেহেরপুর জেলা শহরে বিভিন্ন প্রান্তে জামাত-শিবিরের নেতাকর্মীরা যে তান্ডব শুরু করেছে তা মেনে নেওয়া যায়না। পুলিশ কি কারণে তাদের আটক করছে না সে বিষয়ে আমাদের ভাবার সময় এসেছে।