জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের –মেহেরপুরের গাংনীতে বিএনপি কর্মিকে পিটিয়ে হত্যা। ১৫ বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ সহ লুটপাট। নিহত -২।

জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের –মেহেরপুরের গাংনীতে বিএনপি কর্মিকে পিটিয়ে হত্যা। ১৫ বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ সহ লুটপাট। নিহত -২।

pic-041আমাদের মেহেরপুর ডট কম / মেহেরপুরের গাংনীতে মধ্যযুগীয় কায়দায় পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে এক ব্যক্তিকে। গতকাল ভোরে এই ঘটনা ঘটে। এর আগে শিমুলতলা গ্রামে অন্তত ১৫ টি বাড়িঘরে লুটপাট চালানো হয়। নিহত ব্যক্তির নাম রুস্তম আলী (৫৫)। এই ঘটনার জন্য আওয়ামী লীগ সমর্থকদের দায়ি করেছে বিএনপি। স্থানীয়রা জানান, ভোরে পুলিশের সামনেই প্রতিপক্ষরা গ্রামেরpic-03 বিএনপি সমর্থক ১৫টি বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, ৫ টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে বলে অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সদস্যরা। তারা জানান, সোমবার সকালের দিকে শিমুলতলা গ্রামের বুদু মন্ডলের ছেলে খাইবার আলী মাস্টারের সঙ্গে মিনাপাড়া গ্রামের সামসুল হকের জমি জমা বিরোধের জের ধরে সংঘর্ষ হয়। এসময় উভয় পক্ষের ৬ জন আহত হয়। ওই দিনের আহত সামসুল হকের ছেলে মামুন (২৫) ঢাকার সালাউদ্দীন মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার মধ্যরাত ২ টা ৩০ মিনিটের সময় মারা গেছে বলে জানিয়েছেন তার চাচাত ভাই যুবলীগ নেতা মোশাররফ হোসেন। এ মৃত্যুর এ খবর গ্রামের বাড়ি মিনাপাড়াতে পৌছালে ভোর থেকে মিনাড়া গ্রামের শতাধিক আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী শিমুলতলা গ্রামে হামলা চালায়। শিমুলতলার আবু বক্কর সিদ্দিক, মনিরুল ইসলাম জানান, মিনাপাড়া গ্রামের প্রায় দেড় শতাধিক লোক দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে গ্রামে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। এসময় গ্রামের লোকজনের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে গেলে গ্রামবাসি পালিয়ে যান। এরপর তারা গ্রামে হামলা চালিয়ে ব্যাপক লুটপাট করে। এসময় বিএনপি সমর্থক মৃত দিদার মন্ডলের ছেলে হায়দার আলী,আব্দুসpic-011 সালাম,আবুল কালাম,জাহিদুল ইসলাম,মুক্তার আলীর ছেলে আব্দুল মালেক,আজিজারের ছেলে এমদাদুল হক,বাদল মন্ডলের ছেলে হজরত আলী,বুদু মন্ডলের ছেলে খাইবার আলী মাস্টার,কাউছার আলী,শাবান আলী, আবু তাহের, শিরাজ ডাক্তারের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক লুটপাট করে। হামলাকারীরা আবু তাহেরের ৫ টি pic-02গরু খাইবার আলীর ৩ টি, সিরাজ আলী ডাক্তারের ৪ টি ও ৪ টি ছাগল,হিরাজ আলীর ২ টি,আবুল কালামের ২ টি সহ খাইবার মাস্টারের ৩ টি ছাগল হাঁস মুরগী লুট পাট করেছে। ষোলটাকা ইউনিয়নের সাবেক সদস্য সিদ্দিক আলী জানান, গ্রামের খাইবার আলী মাস্টার,কাউছার আলী,আবু তাহের, সিরাজ ডাক্তার,হায়দার আলী, আব্দুস সালাম ও আবুল কালামের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে প্রতিপক্ষরা। শামছুল ইসলাম মিস্ত্রির লোকজন চলে যাওয়ার সময় ৫ টি বোমার বিস্ফোরন ঘটিয়ে আতংক সৃষ্টি করে। নিহত রুস্তম আলীর ছেলে আনোয়ার হোসেন জানান, বাবা ফজরের নামাজের জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন। এসময় হামলাকারীরা আমার পিতাকে পিটিয়ে হত্যা করে। প্রাণ বাঁচাতে তিনি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলেও তাকে পিছন থেকে ধাওয়া করে রাস্তার উপর বাঁশ দিয়ে পেটায়। পরে আমাদের বাড়িতে লুটপাট করে তার লাশের উপর দিয়ে চলে যায়। পুলিশের এএসপি সার্কেল আব্দুল মতিন জানান, ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। বর্তমানে এলাকা শান্ত রয়েছে। কোন ধরনের অপ্রিতীকর ঘটনা যাতে না ঘটে এ জন্য এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও মেহেরপুর -২ আসনের সংসদ সদস্য আমজাদ হোসেন জানান, আওয়ামীলীগের শতাধিক ক্যাডার বিএনপি সমর্থক নেতা কর্মিদের বাড়ি বাড়ি মধ্যযুগীয় কায়দায় হামলা,লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। তিনি বিএনপি কর্মি রুস্তম আলীর খুনিদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানান। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
উল্লেখ্যঃ গত সোমবার সকালের দিকে শিমুলতলা গ্রামের বুদু মন্ডলের ছেলে খাইবার আলী মাস্টারের সাথে মিনাপাড়া গ্রামের সামসুল হকের জমি জমা বিরোধের জের ধরে সংঘর্ষ হয়। এসময় উভয় পক্ষের ৬ জন আহত হয়। ওই দিনের আহত সামসুল হকের ছেলে মামুন (২৫) ঢাকার সালাউদ্দীন মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বুধবার মধ্যরাতে মারা যায়। এ মৃত্যুর খবর গ্রামের বাড়ি মিনাপাড়াতে পৌছালে সামছুল মিস্তির লোকজন এ হত্যা,ভাংচুর লুটপাট অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটায়।
মেহেরপুর সংবাদ