চা বিক্রেতা থেকেই তিনি প্রধানমন্ত্রী  -দিল্লির মসনদে বসতে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী

চা বিক্রেতা থেকেই তিনি প্রধানমন্ত্রী -দিল্লির মসনদে বসতে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী

আমাদের মেহেরপুর ডট কম ঃ

ভারতে লোকসভা নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল ঘোষণার পর দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি)” নরেন্দ্র মোদি” , এটা নিয়ে আর কোন সংশয়ের অবকাশ নেই। এক চা বিক্রেতার  ছেলে মোদি, যিনি নিজেও একসময় চা বিক্রি করতেন। দিল্লির মসনদে বসতে যাচ্ছেন 23649_mod নরেন্দ্র মোদী। প্রাপ্ত ফল অনুযায়ী ৫৪৩ আসনের ভোটে দলটি জয়ী হয়েছে তিনশ’ ৩৫ আসনে। সরকার গঠনের জন্য বিজেপির প্রয়োজন ছিল দুইশ’ ৭২ আসন। নির্বাচনে অভাবনীয় ভরাডুবি ঘটেছে কংগ্রেসের। দলটি জয়ী হয়েছে ৫৯ আসনে।বাকীরা জিতেছে একশ’ ৪৯ আসনে।  ভারতের ষোড়শ  লোকসভা নির্বাচনে ৭ই এপ্রিল থেকে ১২ই মে পর্যন্ত নয়টি ধাপে ভোট গ্রহণ করা হয়।  নির্বাচনে অংশ নেন ৮ হাজার ২৫১ জন প্রার্থী।পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস ও তামিলনাড়ুর জয়ললিতার এ.আই.এ.ডি.এম.কের আঞ্চলিক দলগুলোর মধ্যে ভোটে এগিয়েছে জনপ্রিয়তায় ধস নেমেছে উত্তর প্রদেশের সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজবাদী পার্টি, বিহারের নীতিশ কুমারের জনতা দলের ।

কে এই মোদি ?

১৯৫০ সালের ১৭ই সেপ্টেম্বর নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদির জন্ম হয়। তার পিতার নাম দামোদরদাস মুলচান্দ ও মায়ের নাম হীরাবেন।শৈশব থেকেই মোদি চায়ের স্টলে তার পিতাকে সাহায্য করতেন।দেশপ্রেমিক ছিলেন মোদি পরিবারের ঐতিহ্য মেনে ১৩ বছর বয়সেই যশোদাবেনকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। সন্ন্যাস জীবনের প্রতি ঝোঁক থাকায় তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে সাধুদের সঙ্গে থাকতে শুরু করলে বিয়ের পর যশোদাবেনও একাকী থাকার সিদ্ধান্ত নেন।হিমালয়ে গিয়ে ২ বছর সন্ন্যাস জীবন কাটান ।সন্ন্যাস জীবন কাটানোর সময় নরেন্দ্র মোদির মাত্র দুটি পোশাক ছিল। অন্য রাজনীতিবিদদের চেয়ে নিজেকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন ও মোদি ব্র্যান্ডটাকে রূপ দেয়ার ব্যাপারে বেশ সচেতন তিনি।

১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে ভারতীয় সেনাদের স্বেচ্ছায় সহযোগিতা করেছিলেন দেশপ্রেমিক  মোদি।   ইস্ত্রি করা পরিপাটি পোশাক পরতে পছন্দ করেন তিনি।  ভারতের সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী জনসমক্ষে নিজেকে উপস্থাপনের ব্যাপারে বেশ সজাগ।গুজরাটে টানা চতুর্থবারের মতো মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে একটানা ২ হাজার ৬৩ দিন ক্ষমতায় ছিলেন গুজরাটের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় মুখ্যমন্ত্রী মোদি। এখনও দায়িত্ব পালন করছেন।

নরেন্দ্র মোদির রসিকতাবোধটাও সাধারণ নয়।বিজেপি’র জয়ের জন্য এবারের লোকসভা নির্বাচনে মোদির স্বতঃস্ফূর্ত ও বুদ্ধিদীপ্ত নির্বাচনী প্রচারণা ভীষণ প্রয়োজন ছিল।তিনি লিখতেও ভালোবাসেন। সমাবেশে যে বক্তৃতাগুলো তিনি দেন, তার একটি বড় অংশ তার নিজেরই লেখা।  ২০০৫ সাল থেকে নরেন্দ্র মোদি যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের ভিসা না পেলেও, মজার ব্যাপার হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে তিনি পাবলিক রিলেশন্স ও ইমেইজ ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে ৩ মাসের একটি সংক্ষিপ্ত কোর্স সম্পন্ন করেছেন।কাজ পাগল এ নেতা রাতে মাত্র ৪ ঘণ্টা ঘুমান । অফিসে ঢোকেন সকাল ৭টায় এবং রাত ১০টা বা আরও রাত পর্যন্ত সেখানে কাজ করেন।নিরামিষাশী মোদী নিঃসঙ্গ থাকতে ভালোবাসেন ও অন্তর্মুখী স্বভাবের ‘বেস্ট ফ্রেন্ড’ নেই তার ।

স্বামী বিবেকানন্দ ও ইন্দিরা গান্ধীকে নিজের আইডল বা আদর্শ মনে করেন নরেন্দ্র মোদি। ভারতীয় রাজনীতিবিদদের মধ্যে শশী ঠারুরের পর নরেন্দ্র মোদিই নারীদের কাছে বেশি জনপ্রিয় এক-বাক্যের রসনাগুলোর মধ্যে তীক্ষ- মেধা ও বুদ্ধির ছটা লক্ষণীয়। কঠোর সংগ্রাম এবং স্থির ও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হবার সত্যিকার অর্থ অনুধাবন করেন। টাইম ম্যাগাজিনের বিশ্বের ১০০ শীর্ষ প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বের তালিকায় স্থান করে নিয়েছিলেন তিনি।

আন্তর্জাতিক