এ বছরের পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার বিজ্ঞানী সের্জ আরশ এবং আমেরিকার ডেভিড ওয়াইনল্যান্ড

এ বছরের পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার বিজ্ঞানী সের্জ আরশ এবং আমেরিকার ডেভিড ওয়াইনল্যান্ড

ফরাসি বিজ্ঞানী সের্জ আরশ এবং আমেরিকার ডেভিড ওয়াইনল্যান্ড যে কৃতিত্বের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত পুরস্কারে এ বার ভূষিত   তা শেষতম বিপ্লব আনবে কম্পিউটার বিজ্ঞানে। ওঁদের গবেষণার সূত্রে এক দিন তৈরি হবে এমন কম্পিউটার, যা আজকের পিসি-ল্যাপটপ-আইপ্যাডের তুলনায় হবে লক্ষ কোটি গুণ ক্ষমতাবান। যাদের চেয়ে বেশি ক্ষমতাবান তথ্য-প্রযুক্তির যন্ত্র হবে না আর কোনও কিছু। তাই এটাই হবে সর্বশেষ বা চূড়ান্ত তথ্য-প্রযুক্তি বিপ্লব। রয়াল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস-এর ঘোষণায় মঙ্গলবার বলা হয়েছে, আরশ এবং ওয়াইনল্যান্ড পুরস্কৃত হল “কোয়ান্টাম বস্তু মাপা কিংবা নাড়াচাড়া করার উপযোগী অভাবনীয় পদ্ধতি আবিষ্কারের জন্য।” কোয়ান্টাম বস্তু জিনিসটা কী? ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে যিনি নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন, সেই আরউইন শ্রোয়েডিংগার কোয়ান্টামের ওই অদ্ভুতড়ে কাণ্ডকারখানা বোঝাতে আস্ত একখানা কাল্পনিক পরীক্ষার বর্ণনা দিয়েছিলেন। যে পরীক্ষা অনুযায়ী, ডালাবন্ধ একটা বাক্সের মধ্যে একটা বেড়াল থাকতে পারে একই সঙ্গে জীবিত এবং মৃত অবস্থায়। কোয়ান্টাম কণা যদি থাকতে পারে এখানে এবং ওখানে,গবেষণা তো কোয়ান্টাম কণার চরিত্র হাতেনাতে ধরা নিয়ে। তাতে কম্পিউটার প্রযুক্তির লাভ? কেমন করে আরশ এবং ওয়াইনল্যান্ডের সাফল্য পথ দেখাবে অমিত ক্ষমতাবান পিসি-ল্যাপটপ-আইপ্যাড তৈরিতে?সাধারণ পিসি-ল্যাপটপ-আইপ্যাড কাজ করে ওই ‘অন-অফ’ সম্বল করে। যাতে কোনও সার্কিট কখনও অন, কখনও অফ। কম্পিউটারের কী-বোর্ডে বা আইপ্যাডের স্ক্রিনে আঙুল চালানো থেকে শুরু করে মনিটরে লেখা ফুটে ওঠার মাঝের পথটুকুতেও রয়েছে অনেকগুলো অন-অফ। অর্থাৎ অনেকগুলো হোঁচট। তাই আপাত ভাবে কাজটা সেকেন্ডের ভগ্নাংশ সময়ে হলেও একটা জায়গায় গিয়ে সাধারণ পিসি-ল্যাপটপ-আইপ্যাডের ক্ষমতা সীমিত। সেই কারণেই কম্পিউটার বিজ্ঞানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত বিজ্ঞানীরা। কোয়ান্টাম-নির্ভর নতুন দিনের কম্পিউটার সেই চিন্তাই দূর করবে। কারণ তাতে কারেন্ট কখনও অন, কখনও অফ নয়। বরং একই সঙ্গে জীবিত ও মৃত বেড়ালের কায়দায় তা থাকবে একই সঙ্গে অন এবং অফ! কাজেই পথ চলা হবে অত্যন্ত দ্রুত। এবং এ হেন যন্ত্রগুলো হবে এখনকার তুলনায় লক্ষ কোটি গুণ বেশি ক্ষমতাবান।

আন্তর্জাতিক