ঈদে মেহেরপুর মুজিবনগর কমপ্লেক্স এ দর্শানর্থীদের উপচেপড়া ভিড়——-দর্শনার্থীদের পর্যটন কেন্দ্র ঘোষনার দাবি।

ঈদে মেহেরপুর মুজিবনগর কমপ্লেক্স এ দর্শানর্থীদের উপচেপড়া ভিড়——-দর্শনার্থীদের পর্যটন কেন্দ্র ঘোষনার দাবি।


mujibnogarআমাদের মেহেরপুর ডট কমঃ মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর উপজেলার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেষে মুজিনবনগর কমপ্লেক্স অবস্থিত। মেহেরপুর প্রধান শহর থেকে প্রায় ১৭ কিঃমিঃ দূরে অবস্থিত কমপ্লেক্সটি। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও এখানে ঈদের দিন থেকে শুরু হয়েছে দর্শনার্থীদের ভিড় । প্রতিদিন এখানে হাজার হাজার দর্শনার্থী আসে। সারা বছরের কর্মব্যস্ততায় স্থবির হয়ে পড়া জীবনের ক্লান্তি দূর করতে ছুটে আসে ঈদের ছুটিতে কর্মব্যস্ত জীবনে বাড়তি আনন্দ-বিনোদনের আশায়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পরিবার-পরিজন বন্ধু-বান্ধব নিয়ে ভিড় করেন মুজিনগর কমপ্লেক্সে। এখানে সুশীতল ছায়াঘেরা আ¤্রকাননে সুনিবিড় স্থানে বসে আপজনদের সাথে মনের একান্ত সময় কাটানোর একটু মুহর্তকে পেতে ভিড় জমায় এসব দর্শনার্থীরা। আবার কেউ কেউ বিভিন্ন সাজে সেজে নেচে গেয়ে আনন্দ উপভোগ করে।। ঈদ কিংবা কোন বিশেষ দিন নয় সারা বছরই এখানে দর্শনার্থীদের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। তাছাড়া শীতকালে পিকনিক ও বনভোজন করতে আসে হাজার হাজার পেশার মানুষ।
তৎকালীন কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুর মহকুমা বৈদ্যনাথ তলা গ্রামটি হাজারো আমের গাছ বেষ্টিত বাগানে ১৯৭১সালে ১৭ই এপ্রিল স্বাধীনতার সুতিকাগার মুজিবনগর বাংলাদেশর প্রথম অস্থায়ী সরকারের শপথ অনুষ্ঠান ও প্রথম রাজধানী হিসাবে খ্যাত হওয়ায় বৈদ্যনাথতলা গ্রাম পরবর্তীতে মুজিবনগর হিসাবে পরিচিতি লাভ করে।    এখানে ১৯৭১ সালের প্রথম অস্থায়ী সরকারের মন্ত্রী পরিষদকে সময়ে ১২ জন আনসার সদস্য গার্ড অফ-অনার প্রদান করে। এসব আনসার সদস্যেদের মধ্যে অনেকে স্মৃতিসৌধের পাশে সরকারী বরাদ্ধকৃত জায়গায় বসবাস করে। দর্শনার্থীরা যেসব আনসার সদস্য বেঁচে আছে তাদের দেখতে আসে। ১৯৮৪ সালে নির্মিত মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে ২৩ টি পিলার রয়েছে যা পাকিস্তান সরকারের ২৩ বছরের শাষন ও শোষনকে স্মরণ করিয়ে দেয়। স্মৃতি সৌধের মধ্যে রয়েছে ৩০ লাখ শহীদের মাথার খুলি সম্বলিত পাথর। স্মৃতি সৌধের মাঝখানের লাল রং দ্বারা আবৃত স্থানটি শপথ অনুষ্ঠানর স্থান হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রায় তিনশত কোটি টাকা ব্যয়ে বিগত আওয়ামীলীগ সরকার মুজিনগর কমপ্লেক্স নির্মানের কাজ শুরু করেন যা এখনও নির্মানাধীন। এখানে গড়ে উঠেছে বঙ্গবন্ধু ৬দফা আনন্দোলনের উপর ভিত্তি করে গোলাপ বাগান, শেখ হাসিনা মঞ্চ, ২টি হেলিপ্যাড, একটি রেষ্টহাউজ, আধুনিক অডিটরিয়াম, পর্যটন মোটেল, উপজেলা পোস্ট অফিস, টেলিফোন অফিস, প্রার্থনার জন্য কেন্দ্রীয় মসজিদ, এতিম ছেলেমেয়েদের জন্য শিশু পরিবার, এছাড়াও প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বাংলাদেশের মানচিত্র ও নয়মাসের স্বাধীনতা যুদ্ধে স্মৃতি সম্বলিত ভাস্বস্কর্য। নির্মিত ভাস্বস্কর্যের মাধ্যেমে ফুটে উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালেয়র স্বাধীনতা পতাকা উত্তোলন ভাস্বস্কর্য, বেনাপোল ও দর্শনা সীমান্ত দিয়ে শরণার্থীদের ভারতে গমন, হাডিং ব্রিজের প্যান ধ্বংসের দৃশ্য, পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর নির্মম অত্যাচার, ৭ই মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষনের ভাস্বস্কর্য ভারতীয় মিত্র বাহিনীর প্রধান অরোরার নিকট পাকিস্তানী বাহিনীর আত্মসর্মপন ও চুক্তি বিনময়ের দৃশ্যের ভাস্বস্কর্য, ১১টি সেক্টর কমান্ডারের নেতৃত্বে সংগঠিত যুদ্ধের কিছু ভাস্বস্কযর্, যা আগামী প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক হতিহাস ও হানাদার বাহিনীর লোহমর্ষক অত্যাচারের কাহিনীকে কিছুটা সময়ের জন্য দর্শনার্থীর হৃদয় ও মনকে শিহ্রীত করবে। দক্ষিনে রয়েছে বঙ্গপোসাগরের রুপ সম্বলিত বদ্ধ পানি দিয়ে তৈরি আস্তরণ দেখে দর্শনার্থীরা অভিভুত হন।এছাড়া শহীদ বুদ্ধিজীবীদের হত্যার দৃশ্য ও রায়ের বাজারের বদ্ধ ভুমির ভাস্বস্কর্য। বেশ কয়েকজন দর্শনার্থী জনানালেন, আমরা মুজিবনগর কমপ্লেক্স দেখে অভিভূত হয়েছি। এখানে দর্শানার্থীদের সুবিধার্থে বসার ও খাওয়া দাওয়ার ¯থান নির্মান, বিশুদ্ধ পানি ,দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সহ সর্বোপরি কমপ্লেক্সটিকে একটি পর্যটন কেন্দ্র ঘোষনা করা হলে সরকার এখাত থেকে লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আয় করতে পারবে।

মেহেরপুর সংবাদ