আর কত সদিয়া ঝড়ে পড়বে-বখাটেদের খপ্পরে পড়ে

আর কত সদিয়া ঝড়ে পড়বে-বখাটেদের খপ্পরে পড়ে

 

আমাদের মেহেরপুর ডট কমঃ

স্কুলছাত্রী সাদিয়া আক্তার পিংকির পাগলপ্রায় মা পাখি আক্তার বাকরুদ্ধ। মেয়ের ছবি বুকে নিয়ে বেকলই ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছেন। কিছুই বলতে পারছেন না। যে দাদী তাকে শিশুকাল থেকে কোলেপিঠে করে মানুষ করেছেন তিনি রীতিমতো অসুস্থ। তাকে বাঁচিয়ে তোলাই এখন হয়ে পড়েছে কষ্টকর মাত্র ১৪ বছর বয়সী এ কিশোরী এ কিশোরী সাদিয়ার ছিল মান-ইজ্জত হারানোর গ্লানি। ছিল মা-বাবাকে হারানোর ভয়। অপহরণকারীর জামিনে বিরোধিতা করাই কাল হলো বখাটেরা আমার   স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দিলো।

অপহরণের ঘটনায় ২রা ডিসেম্বর পিংকির বাবা বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করে। মামলায় রনি ছাড়াও ৩ জনকে আসামি করা হয়। এরা হলো- রনির বোন পাখি, রনির মা এবং রনির বাবা চান মিয়া ওরফে চান্দু। ওই দিনই যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ নারায়ণগঞ্জের আড়াই হাজার থানা এলাকায় রনির এক বন্ধুর বাসা থেকে পিংকিকে উদ্ধার করে। গ্রেপ্তার করে রনি ও তার বোন পাখিকে। পরে তাদেরকে কারাগারে নেয়া হয়।রোববার ছিল রনির জামিন আবেদনের ওপর শুনানি।পিংকির বাবা বাবুল জামিনের বিরোধিতা করেন। এ কারণে ক্ষুব্ধ হয় রনির পরিবার। পিংকি উত্তর মুগদার বাসার যে রুমে থাকতো সে রুম গতকাল ছিল তালাবদ্ধ। পিংকির বাসার আশপাশের লোকজন জানায়, অপহরণ করার পর রনি যে অপকর্ম করেছে তা ভুলতে পারেনি পিংকি।অন্যদিকে বাসায় এসে রনির দু’বোনের অপমানজনক কথাবার্তা হুমকি রয়েছে । এসবের কোন কিছুই মেনে নিতে পারেনি সবে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা দেয়া পিংকি। এ কারণেই বেছে নেয় আত্মহত্যার পথ। পিংকির বাবা বাবুল জানান, পাখি ও তার বোন বাসায় এসে পিংকি ও তার দাদিকে মারধর করেছে।রনির বাবামাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত অমি রোববার রনির জামিনের বিরোধিতা করতে আদালতে গেলে রনির লোকজন আমার ওপর হামলা চালায়। আমি দৌড়ে গিয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের কামরায় আশ্রয় নিই। এ কারণে রনি জামিন নিতে পারেনি বলে মনে করে ।

মুগদা থানার ওসি আবু সালেহ মাসুদ করিম জানান, বিষয়টি খুই স্পর্শকাতর। আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আশা করছি, শিগগিরই তাদের ধরে আইনের আওতায় আনতে পারবো। যাত্রাবাড়ী থানায় দায়েরকৃত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোলাম আজম ভূঁইয়া জানান, রনির পরিবারের সদস্যরা অত্যন্ত ধুরন্ধর প্রকৃতির লোক। বার বার তাদের মোবাইল নম্বর চেয়েও পাইনি। তিনি জানান, পিংকি ও রনি একই স্কুলের একই শ্রেণীতে পড়লেও পিংকি কিশোরী। অপরদিকে রনি প্রাপ্তবয়স্ক। বখাটে প্রকৃতির ছেলে।

বাসায় শিক্ষামন্ত্রী: শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ মুগদায় বখাটে রনি ও তার সহযোগীদের নির্যাতনে আত্মহত্যায় বাধ্য হওয়া সাদিয়া আকতারের বাসায় যান গতকাল বিকালে। সাদিয়ার মৃতদেহ নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার গ্রামের বাড়িতে নেয়া হয় মন্ত্রী যাওয়ার আগেই। মন্ত্রী সাদিয়াদের প্রতিবেশী ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলেন। তিনি সাদিয়ার অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন। মন্ত্রী এলাকাবাসীর প্রতি ছাত্রীদের স্কুল-কলেজে যাতায়াত নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ করার আহ্বান জানান। তিনি নিজ নিজ সন্তানদের প্রতিও খেয়াল রাখার পরামর্শ দেন। তিনি বখাটে রনির উপযুক্ত বিচারের আশ্বাস দেন। এ সময় শিক্ষাসচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নোমান উর রশীদ, মুগদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

জেলার সংবাদ