অবশেষে উদ্ধার হল ১ দিনের শিশু– ফিরে পেল মায়ের কোল ..

অবশেষে উদ্ধার হল ১ দিনের শিশু– ফিরে পেল মায়ের কোল ..

জাহিদ, মেহেরপুর ঃ মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামের এক পাষন্ড মা তার এক দিনের শিশু সন্তানকে ৩২ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছে। এদিকে নব জাতক শিশু সন্তান বিক্রির টাকা তার বর্তমান স্বামী নিয়ে উধাও হয়েছে বলে জানা গেছে। পুলিশ গতকাল রোববার দুপুরে শিশুটিকে উদ্ধার করে তার মায়ের কাছে ফেরত দিয়েছে।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা সম্পর্কে পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, মেহেরপুর জেলা সদরের আমঝুপি গ্রামের সাইদুর রহমানের স্ত্রী শিরিনা খাতুন (৪৩) শুক্রবার মধ্যরাতে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়। শনিবার সকালে সে তার পূর্ব পরিচিত এক মহিলা মেহেরপুর শহরের মুখার্জিপাড়ার আলাউদ্দিনের মেয়ে জুলেখার কাছে সন্তানটিকে ৩২ হাজার টাকায় বিক্রি করে। জুলেখা শহরের কাশ্যব পাড়ায় একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতো।
শিরিনার দুই স্বামী। প্রথম পক্ষের স্বামী চুয়াডাঙ্গা শহরের আব্দুল কুদ্দুসের ঔরসে জন্ম নেয়া ১ ছেলে ও ১ মেয়ে রয়েছে। বর্তমান স্বামীর ঔরসে দেড় বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। এ খবর পেয়ে পুলিশ প্রথম পক্ষের ছেলে আব্দুল আলীম (১৪) ও মেয়ে শিলাকে (১৮) থানায় নেয়। তারা পুলিশকে জানায়, প্রায় দেড় মাস আগে জুলেখা খাতুনের সাথে তাদের মা শিরিনা খাতুনের পরিচয় হয়। তাদের মা গত শুক্রবার রাতে একটি পুত্র সন্তান প্রসব করে। নবাগত শিশুটিকে শনিবার সকালে জুলেখার কাছে ৩২ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়। পুলিশ সুপারের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম ও সহকারি পুলিশ সুপার আব্দুল মতিনের নেতৃত্বে পুলিশের একাধিক দল মেহেরপুর শহরসহ জেলার বিভিন্ন গ্রামে ক্রেতা জুলেখাকে গ্রেফতার ও নবাগত শিশুটিকে উদ্ধারে সাড়াশি অভিযান চালায়। গতকাল রোববার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা জেলার গোকুলখালি থেকে উদ্ধার করে থানায় নেয়। পরে মা শিরিনার কাছে শিশুটিকে ফিরিয়ে দেয়।
পুলিশ সুপার জানান, শিরিনা শিশুটিকে দুখ খাওয়াতে পারবে, মাঝে মাঝে দেখাশোনা করতে পারবে এ শর্তে বিক্রি করে। এদিকে শিশুটি যদি তার মায়ের দুধ খায় এবং দেখাশোনা করে, তবে বড় হয়ে তার মায়ের পরিচয় জেনে যাবে এ ভয়ে ক্রেতা জুলেখা শিশুটিকে কেনার এক ঘন্টা পর এলাকা ত্যাগ করে। মুহুর্তেই খবরটি ছড়িয়ে পড়ে। সাথে সাথে বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ তল¬াশী চালিয়ে রোববার দুপুরে শিশুটিকে উদ্ধার করে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেয়।
তবে সন্তানটি লালন-পালনের জন্য না অন্যত্র বিক্রির জন্য জুলেখা কিনেছিল তা নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে এলাকাবাসীর মাঝে। কারণ জুলেখারও প্রথম স্বামী এক ছেলে ও এক মেয়ে এবং বর্তমান স্বামীর আট মাস বয়সের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তিনটি সন্তান থাকতে কেন সে আবার শিশু সন্তান কিনলো? এ বিষয়ে পুলিশ সুপার বলেন, জুলেখার ছেলে সন্তানটি মানসিক প্রতিবন্ধী। তাই সে ঐ শিশুটিকে লালন পালনের জন্য কিনে নেয়।

মেহেরপুর সংবাদ